উদ্বোধনী ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রাজশাহীকে জেতালেন শান্ত

উদ্বোধনী ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রাজশাহীকে জেতালেন শান্ত

সব নাটকীয়তা পেছনে ফেলে দারুণ এক জয়ে বিপিএলের দ্বাদশ আসর শুরু করল রাজশাহী। উদ্বোধনী ম্যাচে মিরাজের নেতৃত্বাধীন সিলেটকে ৮ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টে শক্ত বার্তাই দিল শান্তর দল।

১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় রাজশাহী। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম।

খালেদ আহমেদের শর্ট বলে মিড অনে হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৮ বলে ১০ রান করা বাঁহাতি ওপেনার শুরু থেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না।

এক উইকেট হারানোর পর ইনিংস গড়ার চেষ্টা করেন সাহিবজাদা ফারহান ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে পাওয়ার প্লেতে খুব বেশি গতিতে রান তুলতে পারেননি এই জুটি।মাঝের ওভারগুলোতে রানের গতি বাড়াতে গিয়ে বিদায় নেন সাহিবজাদা। মেহেদী হাসান মিরাজের ডেলিভারিতে লং অনে খালেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৯ বলে ২০ রান করে ফেরেন পাকিস্তানি এই ব্যাটার।

এরপর রাজশাহীর ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। শুরুতে কিছুটা সময় নিলেও ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরেন দুজন।

দেখেশুনে খেলে ৩৬ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন শান্ত। পঞ্চাশের পর ব্যাট হাতে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। নাসুম আহমেদের এক ওভারে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন তিনি।

শান্ত ও মুশফিকের জুটিতে দ্রুত কমতে থাকে প্রয়োজনীয় রানের হিসাব। ১৭তম ওভারের শেষ বলে ইথান ব্রুকসকে ছক্কা মেরে জুটির শতরান পূর্ণ করেন শান্ত।শেষ ওভারে গিয়ে ৫৮ বলে নিজের সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন রাজশাহীর অধিনায়ক। বিপিএলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতকে রাজশাহীর জয় নিশ্চিত করেন তিনি।

এর আগে টস হেরে ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল সিলেট। ওপেনিংয়ে নেমে সাইম আইয়ুব শুরু থেকেই রাজশাহীর বোলারদের ওপর চড়াও হন। মাত্র ১৫ বল খেলে ২টি ছক্কা ও ৩টি চারে ২৮ রান করে তিনি আউট হন। পাওয়ারপ্লেতে দ্রুত রান তোলার ভিত গড়ে দেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে অন্যপ্রান্তে রনি তালুকদার খানিকটা স্থির ভূমিকা রাখেন। প্রয়োজন অনুযায়ী স্ট্রাইক ঘুরিয়ে ও ফাঁকা জায়গা খুঁজে রান তুলতে থাকেন তিনি। ৩৪ বল মোকাবিলা করে ৪টি চারের সাহায্যে ৪১ রান করে রনি বিদায় নেন সন্দীপ লামিচানের বলে।

এরপর ক্রিজে আসেন আফগান ব্যাটার হজরতউল্লাহ জাজাই। শুরুতে কিছুটা সময় নিলেও পরে হাত খুলে খেলতে চেষ্টা করেন তিনি। তবে বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি জাজাই। ১৮ বলে ২০ রান করে লামিচানের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি৷ তাতে মাঝের ওভারে কিছুটা চাপে পড়ে সিলেট।

সেই চাপ সামলে দলকে আবার এগিয়ে নেন পারভেজ হোসেন ইমন। শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করেন তিনি। বাউন্ডারির পাশাপাশি নিয়মিত সিঙ্গেল-ডাবল নিয়ে রানরেট ধরে রাখেন ইমন। তার সঙ্গে যোগ দেন আফিফ হোসেন। দুজনে মিলে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা চালান। আফিফ ১৯ বলে ৩৩ রান করে রানআউট হলেও ততক্ষণে সিলেট বড় সংগ্রহের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে।

শেষের ওভারগুলোতে পুরোপুরি একক নায়ক হয়ে ওঠেন ইমন। রাজশাহীর বোলারদের কোনো সুযোগ না দিয়ে একের পর এক বড় শট খেলেন তিনি। মাত্র ৩৩ বলে অপরাজিত ৬৫ রানের ঝকঝকে ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৫টি ছক্কা। তার ব্যাটেই শেষ পাঁচ ওভারে ৬৫ রান যোগ করে সিলেট। এটাই এবারের বিপিএলে প্রথম ফিফটি।

রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের বোলারদের মধ্যে সন্দীপ লামিচানে ছিলেন সবচেয়ে সফল। তিনি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুটি উইকেট তুলে নেন। তবে শেষ দিকে বোলাররা ছন্দ হারালে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি চলে যায় সিলেটের হাতে। অতিরিক্ত থেকে আসে ৩ রান।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS