সাধারণ মানুষের সচেতনতাই ডিজিটাল ভূসেবার সফলতা বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ।
তিনি বলেন, ভূমি একটি স্পর্শকাতর বিষয় তাই ভূমিসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সার্বিক বিচার-বিশ্লেষণ ও সততার সঙ্গে করতে হবে। দেখে-শুনে কাজ করতে হবে। সেবা সহজীকরণের জন্য ডিজিটাল ভূমিসেবা চালু হওয়ায় সেবাগ্রহীতাদের জন্য সুযোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে।
অনলাইন নামজারি, খতিয়ান ও ভূমি কর ব্যবস্থাপনায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা না থাকলে এসব উদ্যোগ কাঙ্ক্ষিত ফল বয়ে আনতে পারে না।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ভূমি ভবনের সভাকক্ষে ভূমিসেবা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় বিষয়ক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে সালেহ আহমেদ এসব কথা বলেন। অটোমেটেড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম এ সেমিনারের আয়োজন করে। ভূমি মন্ত্রণালয়াধীন সব দপ্তরের কার্যবলী উপস্থাপন করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এমদাদুল হক চৌধুরী।
সিনিয়র সচিব বলেন, ভূমি মানুষের জীবনের অন্যতম মৌলিক সম্পদ। এক্ষেত্রে অংশীজনদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে ভূমি বিরোধ হ্রাস পায়, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া হয় অধিক বাস্তবসম্মত এবং জবাবদিহি বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ভূমি জরিপ, অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ন্যায্যতা বিবেচনায় নিলে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সহজ হয়। একইসঙ্গে দুর্নীতি ও অনিয়মের সুযোগ কমে আসে।
তিনি বলেন, ভূমিসেবা ব্যবস্থাকে জনবান্ধব, স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে হলে অংশীজনদের অংশগ্রহণকে নীতিগত অঙ্গীকারে রূপ দিতে হবে। অংশগ্রহণমূলক ভূমি শাসনই পারে দীর্ঘদিনের ভূমি জটিলতা কমিয়ে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে এবং টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম করতে।
সিনিয়র সচিব বলেন, ভূমিসেবার অংশীজন শুধু ভূমি মন্ত্রণালয় বা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই না। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সাধারণ ভূমিমালিক, প্রান্তিক কৃষক, দলিল লেখক, আইনজীবী, জরিপকারী, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এই বহুমাত্রিক অংশীজনদের মতামত ও অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই ভূমিসেবা নিশ্চিত অনেকাংশে সম্ভব না।এ সময় তিনি সবার উদ্দেশে ভূমি অফিস পরিদর্শনের আহ্বান জানান এবং তাদের পরামর্শ আশা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এ জে এম সালাহউদ্দীন নাগরী, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।