বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীতে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ধর্মপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিয়ামকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাতে ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মঠবাড়ীয়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সিয়াম ওই গ্রামের একেএম খুরশিদ মাস্টারের ছেলে।
র্যাব জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৯ জুলাই ফেনী শহরের তাকিয়া রোড এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বড় মসজিদের সামনে পৌঁছায়।
সেখানে ছাত্র-জনতা অবস্থান করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিল।
তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ওয়ার্কশপ কর্মচারী মো. আবদুল হান্নান (৩২) অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। আন্দোলন চলাকালীন ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের প্ররোচনায় ও নির্দেশে ধর্মপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিয়াম ও অন্য দুষ্কৃতকারীরা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এছাড়া তারা হকিস্টিক, কিরিচ, দা ও লাঠি-সোটা দিয়ে ছাত্র-জনতাকে পিটিয়ে ও ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এ সময় ভুক্তভোগী মো. আবদুল হান্নান আন্দোলন কর্মসূচির স্থান থেকে দৌড়ে প্রাণে বাঁচার জন্য বড় মসজিদ সংলগ্ন তাকিয়া রোড়ের মুখে পৌঁছালে ছাত্রলীগ নেতা সিয়াম ও দৃষ্কতকারীরা গুলি করলে তার মাথা, সমস্ত মুখমণ্ডলে ও দুই চোখে গুলির স্প্লিন্টার ঢুকে যায় এবং তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে ৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর হান্নানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনিস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়। গুলির স্প্লিন্টারের আঘাতে ভুক্তভোগীর বাম চোখের দৃষ্টিশক্তি স্থায়ীভাবে হারিয়ে যায় ও ডান চোখের দৃষ্টি শক্তিও হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আবদুল হান্নান বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় ৮৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
ফেনী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, গ্রেপ্তার সিয়ামকে শনিবার দুপুরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।