মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সংকট দেখে মনে হচ্ছে, ইসরায়েল সবসময় যুদ্ধের মধ্যেই থাকতে চায়। কেননা তাদের টিকে থাকার জন্য যুদ্ধই সবচেয়ে সহজ পন্থা।বুধবার (০২ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন।
আগের রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল। লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপর লেবাননে স্থল আক্রমণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই দেশটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে ইরান। ইসরায়েল আবার হামলার শক্ত জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, যুদ্ধ বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তবে আহ্বান তারা মেনে নেয়নি। এখন যুক্তরাষ্ট্রের যে সমস্যা, তা হলো সামনে তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনে তাদের সাদা ও ইহুদিদের ভোট লাগবে। কোনো দলই এখন ভোটের জন্য চাপ দেবে না। ইসরায়েল এ সুযোগই এখন কাজে লাগাচ্ছে।
দুই দেশের এ উত্তেজনা কীভাবে বন্ধ হতে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে যুদ্ধের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ প্রভাবশালী দেশের জনগণ যুদ্ধের বিপক্ষে মাঠে নামলে চাপ তৈরি হবে। তাহলে একটি পথ তৈরি হতে পারে। একইসঙ্গে বিশ্ব সম্প্রদায় কী করে, সেটিও দেখার বিষয়।
মধ্যপ্রাচ্য সংকটে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে জানতে চাইলে এ অধ্যাপক বলেন, যুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। যদিও বাংলাদেশ সবসময়ই শান্তির পক্ষে, যুদ্ধের বিপক্ষে, ফিলিস্তিনিদেরও পাশে। তবে যুদ্ধ যদি বাড়তেই থাকে, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থানও স্পষ্ট করতে হবে।
এ যুদ্ধে বাংলাদেশের ওপর প্রভাব পড়বে কি না- জানতে চাইলে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে আমাদের এনার্জি (জ্বালানি) খাতে প্রভাব পড়বে। কেননা এনার্জি সাপ্লাই লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেক্ষেত্রে পলিসি মেকারদের (নীতি নির্ধারকদের) এদিকে নজর দিতে হবে।
গত বছরের অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। সেই থেকে এ পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ৪১ হাজার ৬৩৮ জনের প্রাণ গেছে। আর আহত হয়েছেন অন্ত ৯৬ হাজার ৪৬০ জন। এ সময়ে লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় এক হাজার ৮৭৩ জনের প্রাণ গেছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত ৯ হাজার ১৩৪ জন।