ইসরায়েলের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বেলজিয়ামের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করেছে, ইসরায়েলিরা ঘেন্টের মানবাধিকার নীতি আর মানছে না।শুক্রবার (৩১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ঘোষণা দিয়েছে।
গত মে মাসের প্রথমদিক থেকে ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদ করে আসছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়টির কিছু অংশ দখল করে রেখেছে।
এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, তারা তাদের তদন্তে ইসরায়েলের একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে দেশটির সরকার, সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলোর সংযোগ দেখতে পেয়েছে। এ বিষয়টি বেশ উদ্বেগজনক। তদন্তে আন্তর্জাতিক আদালতের সাম্প্রতিক রায়ও উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রায়ে আন্তর্জাতিক আদালত বলেছে, গত কয়েক মাসে গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।
গত দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের তিনটি ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, এরপরও তারা আরও ১৮টি ইসরায়েলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক বজায় রেখেছিল।
যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইসরায়েলি সরকার, সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলোর সংযোগ রয়েছে, সেগুলো বাদে দেশটির নন-একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছে ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়। কেননা, এই ছয়টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো সম্পর্ক তারা খুঁজে পায়নি। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে গবেষণা প্রকল্পগুলো চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানিয়েছে ঘেন্ট।
বেলজীয় সম্প্রচারমাধ্যম ভিআরটিকে বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছে, তারা ঘেন্টের এ সিদ্ধান্তকে সম্মান করে। তবে তারা চাইছেন, বাকি ছয়টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও ঘেন্ট সম্পর্ক ছিন্ন করুক। যে কারণে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
গত সপ্তাহের শুরুর দিকে বেলজিয়ামের আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তাদের সম্পর্কের পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করেছে।
অ্যান্টওয়ার্প বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তাদের চলমান প্রকল্পগুলো চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে ইসরায়েলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যে নতুন প্রকল্পগুলো শুরু করার কথা ছিল সেগুলোকে স্থগিত ঘোষণা করেছে।
দ্য ইউনিভার্সিটি লিব্রে ডি ব্রুকসেলস ঘোষণা দিয়েছে, এটি তার ইসরায়েলি অংশীদারদের সঙ্গে আর কোনো প্রকল্প শুরু করবে না। একই নীতি প্রযোজ্য হবে তার ফিলিস্তিনি অংশীদারদের ক্ষেত্রেও। যতক্ষণ না তারা জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে ততক্ষণ অবধি তাদের সঙ্গেও আর কোনো প্রকল্প শুরু করবে না বিশ্ববিদ্যালয়টি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৯৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৮১ হাজার ১৩৬ জন।