চোখের পাতায় বিভিন্ন রকম গ্রন্থি বা গ্ল্যান্ড থাকে। তার মধ্যে অন্যতম একটি গ্ল্যান্ড হলো মিবোমিয়ান গ্ল্যান্ড।এই গ্ল্যান্ড থেকে চোখের পাতার জন্য প্রয়োজনীয় তেল নিঃসরণ হয়। কোনো কারণে এই গ্ল্যান্ডের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে— যেমন মৃত কোষ, ময়লা বা চোখের পাতার খুশকি জমে যদি মিবোমিয়ান গ্ল্যান্ডের মুখ বন্ধ হয়ে যায় তখন ভেতরের সিক্রেশন জমে চোখের পাতা ফুলে গিয়ে ক্যালাজিয়ন হয়ে থাকে। এটি সাধারণত ব্যথাহীন হয়, তবে এর সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে সেক্ষেত্রে ব্যথা থাকতে পারে। ক্যালাজিয়নের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থাকলে তাকে ইন্টারনাল হর্ডিওলাম বলা হয়।
কাদের বেশি হয়?
কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অঞ্জনি হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে।
*যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম (যেমন—ডায়াবেটিক রোগী)।
*যাদের মাথার স্ক্যাল্প ও চোখের পাতায় খুশকি হয়।
*যারা চোখের পাতায় বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করেন (যেমন—কাজল, আইশ্যাডো, আইলাইনার)।
প্রতিকার
* চোখের পাতা ও মাথার স্ক্যাল্প সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
* যাদের অঞ্জনি হওয়ার প্রবণতা বেশি তাদের ক্ষেত্রে চোখের পাতায় কোনো ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না।
অঞ্জনি হলে কী করবেন?
* চোখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
*চোখ ঘষা যাবে না।
* চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে।
* চোখে কোনো ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। যেমন— কাজল, আইলাইনার, আইশ্যাডো, মাসকারা
* কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
* ক্ষারহীন শ্যাম্পু পানিতে মিশিয়ে নিয়ে চোখের পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
* উষ্ণ গরম পানিতে কটন প্যাড বা পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট সেঁক দিতে হবে। এই কাজ দিনে তিন-চারবার করতে হবে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
চোখ লাল হয়ে গেলে বা চোখের ভেতর থেকে ময়লা এলে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ক্যালাজিয়ন কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসা নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই সেরে যায়; তবে অনেক সময় চিকিৎসা নেওয়ার পরেও ক্যালাজিয়ন ভালো হয় না এবং বড় আকার ধারণ করেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে ছোট একটি অপারেশন করে কেটে ফেলতে হবে।