ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

জুলাই বিপ্লবী ও আধিপত্যবাদবিরোধী ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত‍্যার বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়েছে। 

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জুমার নামাজের পর ইনকিলাব মঞ্চের নেতৃত্বে এ অবরোধ শুরু হয়।

এর আগে ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলটি এসে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে।

অবরোধের কারণে ওই এলাকায় যান চলাচল থমকে আছে।

সকালে ইনকিলাব মঞ্চের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা ও খুনিদের বিচারের দাবিতে বাদ জুমা দেশব্যাপী দোয়া-মোনাজাত ও বিক্ষোভ মিছিলের আহ্বান জানানো হয়।

গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসী। রিকশায় থাকা হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ওসমান হাদি পরে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গড়ে তুলে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আলোচনায় আসেন। বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শোতেও নিয়মিত আমন্ত্রণ পেতে থাকেন তিনি। তার যুক্তিতর্কের অনেক ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। 

গুলিবিদ্ধ হওয়ার মাসখানেক আগে হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ওসমান হাদি। তিনি গত নভেম্বরে নিজের ফেসবুক পেজে বলেছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে ফোনকল করে এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ ক্যাডাররা তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখছে। তবে প্রাণনাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইনসাফের লড়াই থেকে পিছিয়ে যাবেন না তিনি।

১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় প্রচারে যাওয়া ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসী। রিকশায় থাকা হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাকে নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর দেখে সেখান থেকে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যায় সরকার। চিকিৎসকদের সর্বাত্মক চেষ্টার পরও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে যান হাদি। ১৮ ডিসেম্বর রাতে তার মৃত্যুর খবর জানান চিকিৎসকরা।

মৃত্যুর পর ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওসমান হাদির লাশ বাংলাদেশে আনা হয়। সেখান থেকে লাশ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হিমঘরে নেওয়া হয়। এরপর ২০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় লাখ লাখ জনতার অংশগ্রহণে তার জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়। জানাজার পর তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে চিরসমাহিত করা হয়।

ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল সন্দেহভাজন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখ। তারা ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে সেদিনই খবর ছড়ানো হয়। যদিও গোয়েন্দা পুলিশ এ বিষয়ে সন্দেহের কথা জানিয়ে বলছে, ফয়সাল করিম মাসুদের অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন এমন নির্ভরযোগ্য তথ্যও পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS