ভারতের মৌলিক স্বার্থ যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ গঠনমূলক পদক্ষেপ নেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা ও সংসদ সদস্য শশী থারুর। একই সঙ্গে ভারতও বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ বিষয়ক ভারতের সংসদীয় প্যানেলের প্রধান শশী থারুর শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন গোষ্ঠী রয়েছে যারা ‘অর্থহীন ও অবিবেচক মন্তব্য’ করছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই সম্প্রতি এক ছাত্রনেতার বক্তব্য দেখেছেন, যিনি বলেছেন ভারতের সাতটি রাজ্যকে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। তিনি কে এমন কথা বলার? কিন্তু এ ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে, আর সে কারণেই আমরা অত্যন্ত সতর্ক রয়েছি—কারণ এমন উপাদানগুলো খোলামেলাভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
সম্প্রতি জুলাই বিপ্লবী ও ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী ‘ইনকিলাব মঞ্চ’র আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পর মূল সন্দেহভাজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখ ভারতে পালিয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।ওসমান হাদি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে মৃত্যুবরণ করেন।
হাদিকে গুলি করার ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ জুলাইয়ের খুনি শেখ হাসিনাসহ সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য ভারতের সমালোচনা করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচন বানচাল করতে চাইছে, দেশের পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল করতে চাইছে, সীমান্তে যারা আমাদের ভাইদের-বোনদের মেরে ঝুলিয়ে রাখে, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পৃষ্টপোষকরা দিচ্ছে ভারত। ভারতকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যারা আমার দেশের সার্বভৌমত্বকে বিশ্বাস করে না, যারা আমার দেশের সম্ভাবনাকে বিশ্বাস করে না, যারা ভোটাধিকারকে- মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না, যারা এ দেশের সন্তানকে বিশ্বাস করে না, আপনারা (ভারত) যেহেতু তাদের আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছেন, কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই–– ভারতের যারা সেপারেটিস্ট আছে, বাংলাদেশে আমরা তাদের আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার্স আছে সেটাকে ভারতে থেকে আলাদা করে দেবো।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শশী থারুর আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ গঠনমূলক পদক্ষেপ নেবে, যাতে ভারতের মৌলিক স্বার্থ কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। একই সঙ্গে আমরাও বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করব।’
এর আগে বুধবার দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় ভারত। হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ওই তলবের অন্যতম কারণ ছিল হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য।