রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, আমি ভেসে আসিনি, পাবনার রাজপথ থেকে বঙ্গভবনে গিয়েছি। রাজনীতির এমন কোনো অঙ্গন নাই আমি ছুঁয়ে দেখেনি। আমি বঙ্গবন্ধুর ছোঁয়া পেয়েছি। কারাগারে যেতে হয়েছে। চরম অত্যাচারিত হয়েছি। রাতের আঁধারে তুলে নেওয়া হয়েছে। হাতকড়া পরানো হয়েছে। ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়েছে। রাজপথে সক্রিয় হয়ে আমি বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাকশালের পাবনার জয়েন্ট সেক্রেটারি হয়েছিলাম।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে নাগরিক সমাজ কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করেই এতদূর এসেছি। বর্তমানে আমাকে সকল রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে রাষ্ট্রীয় কাজ সম্পাদন করতে হবে। তবে অতীতের রাজনৈতিক পরিচয় অস্বীকার করতে পারব না।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি সংবিধান পেয়েছি। কিন্তু এটাকে বহুবার বিভিন্নভাবে ক্ষতবিক্ষত ও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বাংলার জনগন বহু কষ্টে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে বেছে নিয়ে গণতন্ত্রকে আবার পুনঃস্থাপন করেছে। এই ধারাকে ধরে রাখতে হবে। সামনে জাতীয় নির্বাচন বাঙালি জাতির অস্তিত্বের এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। তাই পাবনাবাসীসহ দেশবাসীকে অতীত এবং বর্তমান সময়ের হিসেব-নিকেশ করে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে পরাস্ত করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। অনেক মন্ত্রী আমার কাছে এসে বিশ্ব ব্যাংকের দাবি মেনে নিতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি রাজি হইনি। এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল। কিন্তু আমি শক্ত হাতে মোকাবিলা করেছি।
সাহাবুদ্দিন বলেন, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি দেশের জন্য কখনও মঙ্গলজনক হয় না। রাজনৈতিক হিংসা ভুলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে হবে।
এ সময় আগামী সেপ্টেম্বরে পাবনা থেকে ঢাকা সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে ঘোষণা দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ধাপে ধাপে পাবনাবাসীর সব দাবি পূরণের আশ্বাস দেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলামের সভাপতিত্বে নাগরিক সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য দেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু প্রমুখ।
এর আগে রাষ্ট্রপতি বেলা সাড়ে ১১টায় পাবনা প্রেস ক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।