মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএ তাদের এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত আগস্টে বুরকিনা ফাসোর বারসালোঘো শহরে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জঙ্গি-গোষ্ঠী জামায়াত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিম (জেএনআইএম) হামলা চালিয়ে প্রায় ৬শ জনকে হত্যা করেছে।
সিএনএ বলছে, সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে করে গ্রামটিতে প্রবেশ করে এরপর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে হত্যা করেন।নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বুরকিনা ফাসোর ইতিহাসে এটি অন্যতম বড় হত্যাকাণ্ড।
তবে জাতিসংঘের অনুমান ওই সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা ২০০। অপরদিকে জেএনআইএমের দাবি, তারা দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠীর ৩০০ জন সদস্যকে হত্যা করেছে। যদিও সিএনএন ফারাসি সরকারের উপাত্তের বরাত দিয়ে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বলে দাবি করছে।
এ হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানান, সেনাবাহিনীর নির্দেশ অনুযায়ী বারসালাঘোর শহরের চারপাশে একটি বিশাল পরিখা খনন করছিলেন তারা। সে সময়ই জেএনআইএমের বন্দুকধারীরা হামলা চালায়। পালানোর জন্য হামাগুঁড়ি দিয়ে পরিখায় যাওয়ার চেষ্টা করলে দেখতে পাই হামলাকারীরা পরিখাটি অনুসরণ করছেন। পরে হামাগুঁড়ি দিয়ে পরিখা থেকে বের হয়ে একটি ঝোঁপের নিচে বিকেল পর্যন্ত লুকিয়ে ছিলাম। পরিখার মধ্যে যে পথটুকু আমি পাড়ি দিয়েছি, পুরো পথটিই ছিল রক্তাক্ত।
পরিবারের সদস্য হারানো একজন সিএনএনকে বলেন, হামলাকারীরা সারাদিন মানুষ হত্যা করেছেন। তিনদিন ধরে আমরা মরদেহ উদ্ধার করছিলাম। চারিদিকে মরদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। দাফনের সময় মাটিতে এত মরদেহ পড়ে ছিল যে, এ কাজ করা কঠিন ছিল।
আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠী জেএনআইএম ২০১৫ সালে মালি থেকে বুরকিনা ফাসোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে সংঘাতে জড়াতে থাকে। সাহেল অঞ্চলের এই দেশটি সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ২০ হাজারে বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২০ লাখের বেশি মানুষ।