নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে টাইপ-টু ডায়াবেটিস এবং স্থূলতার চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত একটি ওষুধ মানব শরীরে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে। এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা।
সেমাগ্লুটাইড বা ওজেম্পিক নামে বেশি পরিচিত ওষুধটি হার্ট ফেইলিওর, আর্থ্রাইটিস, আলজেইমার এবং এমনকি ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগের চিকিত্সার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
এবছরের ইউরোপীয় সোসাইটি অফ কার্ডিওলজি কনফারেন্সে এই সম্পর্কিত গবেষণাগলো উপস্থাপন করা হয়েছিল। কনফারেন্সে এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিন এর অধ্যাপক হারলান ক্রুমহোলজ জানান, ওজেম্পিক মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটিয়ে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।
অধ্যাপক ক্রুমহোলজ সম্পাদনায় গবেষণার ফলাফল আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি জার্নালসহ বেশ কয়েকটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। খবর বিবিসি
৪৫ বা তার বেশি বয়সী ১৭ হাজার ৬শ জনেরও বেশি লোকের ওপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের ছিল এবং তাদের কার্ডিওভাসকুলার রোগ ছিল কিন্তু ডায়াবেটিস ছিল না। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের হয় ২.৪ মিলিগ্রাম সেমাগ্লুটাইড অথবা একটি প্লাসিবো (নকল বা অকার্যকর ওষুধ) দেওয়া হয়েছিল।
গবেষকরা দেখেছেন যারা ওষুধটি (সেমাগ্লুটাইড) গ্রহণ করেছিলেন তারা কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা এবং কোভিড-১৯ বা অন্য কোনো সমস্যায় কম হারে মারা গেছেন। ওজন কমানোর ওষুধ ব্যবহার করা লোকেদের কোভিড ধরা পড়ার সম্ভাবনা ছিল ঠিক কিন্তু তাদের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল। গবেষণায় দেখা যায় যারা প্ল্যাসিবো নিয়েছে তাদের মৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ বিপরীতে সেমাগ্লুটাইড গ্রহণকারী মারা গেছেন ২.৬ শতাংশ।
তাছাড়া গবেষণায় অংশগ্রহণকারী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ধারাবাহিক ভাবে কার্ডিওভাসকুলারের ঝুঁকি হ্রাস করে বলে প্রমাণিত হয়েছে। ওজন বেশি বা কম যাই হোক না কেন এই ওষুধ হৃদ রোগের লক্ষণগুলোও কমিয়ে আনে।