ভারতের উত্তর প্রদেশের হাতরাসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত তিন শিশুসহ ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি তাদের অনলাইন সংস্করণে এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার (২ জুলাই) উত্তর প্রদেশের হাতরাসে ‘শিব স্মরণে’ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘সৎসঙ্গ’ আয়োজিত হয়। প্রার্থনা সভা পদদলিত হয়ে ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিন শিশু ও ২৪ জন নারী রয়েছেন।
কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের ভিজ্যুয়ালে দেখা গেছে, বাস ও টেম্পোর মাধ্যমে মরদেহ হাসপাতালে আনা হচ্ছে। সেখানের নিহতদের স্বজনদের কান্না করতে দেখা গেছে।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাটি জানার পর তার নির্দেশে তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ইটাহের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. উমেশ কুমার ত্রিপাঠি স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা হাতরাস থেকে আসা বহু মরদেহ পেয়েছেন। তিন শিশু ও ২৪ জন নারী মারা গেছেন। বেশ কয়েকজন আহতকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি হতাহতরা সৎসঙ্গ প্রার্থনা সভায় যোগ দিয়েছিলেন।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশিস কুমার বলেছেন, কমিউনিটি হেলথ সেন্টার থেকে প্রাপ্ত সংখ্যা অনুসারে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। ইটাহ জেলার কর্মকর্তারা অতিরিক্ত ২৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, হাতরাসের সিকান্দ্রা রাও থানা সীমানার মধ্যে পুলরাই গ্রামে সৎসঙ্গ আয়োজন করা হয়েছিল। এটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান, এর অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল।
ইটাহের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ রাজেশ কুমারও নিহতদের সংখ্যা জানিয়েছেন। তার তথ্য অনুসারে নিহতদের মধ্যে ২৫ নারী, তিন শিশু ও বাকিরা পুরুষ।
মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, হাতরাস জেলায় দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হৃদয় বিদারক। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। ঘটনাস্থলে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উত্তর প্রদেশ সরকারের মন্ত্রী লক্ষ্মী নারায়ণ চৌধুরী ও সন্দীপ সিং ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। পুলিশ মহাপরিচালককে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এডিজি, আগ্রা ও আলিগড় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়েছে। তাদের দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
তিনি নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করেন।
একই মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, হাতরাসে দুর্ঘটনায় শিশু-নারী ভক্তদের মৃত্যুর খবর হৃদয় বিদারক। যারা পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা; আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।