কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থেকে ধার নেওয়া অর্থ ফেরত দিতে শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। ইতিমধ্যে ২০ কোটি ডলার ঋণের মধ্যে ৫ কোটি ডলার ফেরত দিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ২০২১ সালের মে মাসে এক বছর মেয়াদে এই ঋণ নিয়েছিল দেশটি।
কর্মকর্তারা বলেন, ‘দেশটি ঋণ পরিশোধে এর আগে বারবার সময় নিলেও নতুন করে আর সময় বাড়ানো হয়নি। তারা ৫ কোটি ডলার গত বৃহস্পতিবার আমাদের হিসাবে জমা দিয়েছে, যা রোববার বুঝে পেয়েছি। চলতি মাসে আরও ১০ কোটি ডলার এবং আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ৫ কোটি ডলার ঋণ ফেরত দেওয়ার সূচি রয়েছে। তারা এই সূচি অনুযায়ী অর্থ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শ্রীলঙ্কার পর্যটন খাত ব্যাপক ক্ষতিতে পড়েছিল। বৈদেশিক বিনিময়ে প্রতিনিয়ত মান হারানো শুরু করে দেশটির মুদ্রা রুপি। এতে টান পড়ে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতে। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে ডলার ধার করে শ্রীলঙ্কা। এরই অংশ হিসেবে ২০২১ সালের মে মাসে বাংলাদেশ সরকারও ২০ কোটি ডলার ধার দেয় দেশটিকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এই ডলার দেওয়া হয়।
মুজিব চিরন্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় এসেছিলেন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ডব্লিউ ডি লক্ষ্মণ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে ডলার চেয়ে চিঠি দেন। এরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ধার হিসেবে নয়, বরং ডলারের সঙ্গে শ্রীলঙ্কান রুপি অদলবদল বা সোয়াপ করেই তা দেওয়া হয়। এর বিপরীতে কিছু সুদও পায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কাছে ২০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ শ্রীলঙ্কান রুপি জমা ছিল। ৫ কোটি ডলার শোধ করায় ইতিমধ্যে সমপরিমাণ রুপি দেশটিকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য এ ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।