প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ কখনই কোনো বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবে না।
ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে বুধবার এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে।
এই আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশি-বিদেশি চাপ যতই আসুক না কেন, বাঙালিরা কখনোই সেই চাপের কাছে মাথা নত করবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, এ দেশ আমাদের। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।’
ছয় দফা ছিল বাংলাদেশের জনগণের ‘মুক্তিসনদ’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আমরা রোল মডেল হিসেবেই এগিয়ে যাব।’ তিনি দেশের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে আর কেউ দমন করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, ‘গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নয়ন হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাইরের কোনো শক্তি বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং তাদের ব্যবহার করা হবে।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর বিএনপির উৎফুল্ল মেজাজ প্রসঙ্গে বলেন, ‘তারা মনে করে, অন্য কোথাও থেকে কেউ এসে তাদের আনন্দ-উল্লাস করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউই এটি করবে না (তাদের ক্ষমতায় আনতে) এবং কখনো কেউ তা করে না, বরং ব্যবহার করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ তারা (বিএনপি) আন্দোলন-সংগ্রাম করবে। একদিক থেকে এটি ভালো যে তারা যদি অগ্নিসংযোগ সহিংসতা অবলম্বন করে এবং মানুষকে হত্যা করে, তবে তারা মার্কিন ভিসা পাবে না।’ তিনি বলেন, যাদের কথায় তারা (বিএনপি) নাচে, তারা তাদের (বিএনপি) ধ্বংস করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। এ নিয়ে আমাদের ভাবারও কিছু নেই।’ তিনি (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে) আগেই বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে বলে দিয়েছেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তারা কত আন্দোলন করতে পারে, করতে দিন। আমরা কিছু বলব না।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সব সময় তাদের চোখ খোলা এবং ক্যামেরা চালু রাখতে বলেছেন, যাতে তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসংযোগ সহিংসতা, মানুষ পুড়িয়ে মারার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় গ্রিডে আরও বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ার ফলে চলমান বিদ্যুতের পরিস্থিতি ১০-১৫ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছি। আমি জানি, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, মানুষের দুঃখ-কষ্ট উপলব্ধি করতে পারি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। দু-এক দিনের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে আরও বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। তখন আর কোনো কষ্ট থাকবে না।’