বছরের এ সময়টাতে অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয়ের একটি হলো ‘ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্ট’। যেহেতু জুন মাসই ট্যাক্স রিবেটের জন্য বিনিয়োগের শেষ সময়, তাই বেশির ভাগ ট্যাক্স প্রদানকারী এ সময়ে এসেই ট্যাক্স রিবেটের জন্য কত বিনিয়োগ করতে হবে, কোথায় করতে হবে—সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকেন।
বিনিয়োগ কত করতে হবে, সেটা খাতা-কলমে হিসাব করে নেওয়া গেলেও দ্বিধাটা সৃষ্টি হয় ‘বিনিয়োগটা কোথায় করা হবে’—এই সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে। ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্টটা কত হবে, আগে কত ইনভেস্ট করা হয়েছে, এসব মাথায় রেখে একেকজন বিনিয়োগকারী একেক খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। এই বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য যেহেতু ‘ট্যাক্স রিবেট’, তাই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই নিরাপদ খাত বেছে নেওয়ার প্রবণতা থাকে। যাঁদের বড় অঙ্কের ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্ট প্রয়োজন, সঙ্গে একটা মোটামুটি ভালো রিটার্নও চান, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাত ‘সঞ্চয়পত্র’। একই সঙ্গে বিনিয়োগের নিরাপত্তা এবং ভালো রিটার্নের সুবিধা থাকায় এককালীন ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্টের জন্য সঞ্চয়পত্রের বিকল্প নেই বললেই চলে। বিপত্তিটা বাধে, যখন সঞ্চয়পত্রের কোটা শেষ হয়ে যায়। ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্ট তো প্রতিবছরই করতে হয়, কিন্তু সঞ্চয়পত্রে একজন বিনিয়োগকারী তাঁর জীবনকালে বিনিয়োগ করতে পারেন সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা।
তা ছাড়া এমন ট্যাক্স প্রদানকারীর সংখ্যা নেহাত কম নয়, যাঁদের ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। মূলত, নিরাপত্তা নিয়ে বিপত্তিটা বাধে তখনই। কারণ, অনেকেই এ পর্যায়ে বিনিয়োগের খাত হিসেবে স্টক মার্কেটকে বেছে নেন। স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ট্যাক্স রিবেট পাওয়া যায়। সঙ্গে থাকে অধিকতর রিটার্নের সুযোগ। এই দুটি সুবিধার সঙ্গে অবধারিতভাবে যেটা চলে আসে, সেটা হলো ‘ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক’। তা ছাড়া, মে-জুন মাসে এসে হুট করে স্টকে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। স্টক মার্কেটের হিসাব-কিতাব সঠিক জানা থাকলেও সময় নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণের পরই এই বিনিয়োগ করাটা বাঞ্ছনীয়। তাড়াহুড়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুল সিদ্ধান্ত হওয়ার সুযোগ থেকে যায়।
তাহলে উপায় কী? সর্বোচ্চ ট্যাক্স রিবেট দিতে পারে, একই সঙ্গে নিরাপদ—ধরনের যে খাতগুলো আছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয় ‘ড্যেট মিউচুয়াল ফান্ড’। বিশ্বজুড়েই এর খ্যাতি এবং চল থাকলেও বাংলাদেশে এ খাত এখনো অপরিচিতই বলা যায়। ২০২১ সালের জুনে ‘আইডিএলসি ইনকাম ফান্ড’ নামে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ড্যেট মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে আসে আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। এই ফান্ডের বৃহদংশই বিনিয়োগ হয়ে থাকে ট্রেজারি বিল বন্ডে। সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে, এ ফান্ড তার কোনো অংশই সেকেন্ডারি শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে না। যার ফলে ‘আইডিএলসি ইনকাম ফান্ড’ –এর মাধ্যমে বিনিয়োগের নিরাপত্তা বজায় রেখেই বিনিয়োগকারীরা পেতে পারেন সর্বোচ্চ ট্যাক্স রিবেটের সুবিধা; সঙ্গে ভালো রিটার্ন।
যাত্রা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আইডিএলসি ইনকাম ফান্ডের অ্যাভারেজ কম্পাউন্ডেড অ্যানুয়াল রিটার্ন ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। গঠনগতভাবে ভিন্নতা এবং সফল ফান্ড ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে স্টক মার্কেটের ঝুঁকিকে পরিহার করে এ পর্যন্ত প্রতি মাসেই বেড়েছে আইডিএলসি ইনকাম ফান্ডের ন্যাভ।
তাই যাঁদের সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগসীমা ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, বিনিয়োগের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্ট করতে চাইলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতের এই নতুন সংযোজন ‘আইডিএলসি ইনকাম ফান্ড’–ই হতে পারে তাঁদের জন্য প্রধান বিবেচ্য খাত।