হাসিনার ভারতেই থাকা উচিত: শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট

হাসিনার ভারতেই থাকা উচিত: শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে সেখানেই থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে এ পরামর্শ দেন তিনি।

টানা তিন মেয়াদে বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন হাসিনা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তিনি গদি হারান। পদত্যাগ করার পর মুহূর্তেই ভারতে পালিয়ে যান তিনি।

সাক্ষাৎকারে রণিল বিক্রমাসিংহে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশটির জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা কীভাবে তাদের দেশ চালাতে চায়।

সংবাদমাধ্যমটির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পাল্কি শর্মা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের ব্যাপারে রণিলের মন্তব্য জানতে চান। উত্তরে লঙ্কান প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতেই থাকা উচিত। তিনি এখন বেশ উদ্বিগ্ন। তার অনেক নেতা দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে গেছেন। যদি তিনি (হাসিনা) দেশের বাইরে থাকেন—তাকে দেশের বাইরেই থাকতে দিন। আমরা সবাই চাই বাংলাদেশ স্বাভাবিকতার দিকে মনোনিবেশ করুক।

শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের বিষয়ে জনসমক্ষে কথা বলেছেন। বিষয়টি বাংলাদেশে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছে তখন, বিশেষ করে যখন সাম্প্রতিক মাসগুলোয় সেখানে ভারতবিরোধী মনোভাব বেড়েছে।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের কাছে বিষয়টিকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ-ভারতকে কী পরামর্শ দেবেন, জানতে চাওয়া হয়। রণিল বলেন, প্রথমে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনতে হবে— প্রথমে জনগণকে আস্থা দিতে হবে। শেখ হাসিনার বিষয়টি রাজনৈতিক ইস্যু। এ ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এমনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি যেটিকে অগ্রাধিকার দেব তা হলো, বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকবে সেটি নিশ্চিত করা।

তিনি আবারও বলেন, শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থাকতে চাইলে তাকে সেটাই করতে দিন। আমি মনে করি বাংলাদেশে দ্রুত স্থিতিশীলতা আসতে হবে। সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হতে পারে। আমরা সবাই চাই, বাংলাদেশের জনগণকে কীভাবে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করুক।

২০২২ সালে প্রায় একই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাকসে জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপরই পালিয়ে মালদ্বীপে চলে যান। দেশের এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট পদ গ্রহণ করেন রণিল বিক্রমাসিংহে। একটি সমঝোতার মাধ্যমে তিনি এ পদ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে নিজ দেশের অর্থনৈতিকে সুরক্ষিত রাখার পথ তৈরি করেন। এরপর শ্রীলঙ্কায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রণিল বিক্রমাসিংহে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS