এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সফল কাউন্সিলরদের স্বর্ণপদক দেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির যেসব ওয়ার্ডে কেবল শূন্য সংখ্যক ডেঙ্গুরোগী থাকবে তাদের এ পদক দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উওর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের হলরুমে দ্বিতীয় পরিষদের ২৮তম করপোরেশন সভায় এ ঘোষণা দেন তিনি।
এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাউন্সিলরদের আরও বেশি উৎসাহী করার জন্যই এ ঘোষণা ডিএনসিসি মেয়রের। ডিএনসিসির সব ওয়ার্ডে একযোগে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, রাজনীতিবিদ, মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভা ও র্যালি আয়োজন করছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিতরণ করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচারণার ব্যবস্থা করছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর ঈদে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে আমরা সফল হয়েছিলাম। পূর্ব ঘোষিত ৮ ঘণ্টারও কম সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এ বছর আমাদের টার্গেট ৬ ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা। সব কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, ও পরিচ্ছন্ন কর্মীরা সার্বক্ষণিক মাঠে থাকতে হবে। আমি নিজেও মাঠে থাকবো।
কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে জড়িত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য ডিএনসিসিতে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি ওয়ার্ড ভিত্তিক তদারকি টিম গঠন করে দিয়েছি। নির্ধারিত সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে। তাদের পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে ঈদের পরে প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হবে। তাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এই আয়োজন করা হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ঈদে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ঈদের সময়ে কোথায় যেন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত রাখাসহ প্রকৌশল বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সব কর্মকর্তা কর্মচারীকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখন থেকেই ড্রেন ও ক্যাচপিট পরিষ্কার রাখতে হবে।
সভায় ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুর পিক সিজন হিসেবে গননা করা হয়। উল্লেখিত সময়সীমার মধ্যে জরিপে যেসকল ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা শূন্য থাকবে সেকল ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের দেয়া হবে এই পুরস্কার। পাশাপাশি পুরস্কৃত করা হবে মশক সুপারভাইজার ও মশক কর্মীদেরও। ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ঠিক করে এটি বাস্তবায়ন করবে।