গোপালগঞ্জে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন ‘সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের’ পুকুরের বিপুল পরিমাণ মাছ চুরি করার সময় কয়েকজন জেলেকে হাতেনাতে ধরেছেন দুদকের কর্মকর্তারা।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কেজি মাছ জব্দ করা হয়।
রিসোর্টে দায়িত্বরত মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামের নির্দেশে মাছ ধরতে আসেন বলে জানিয়েছেন আটক জেলেরা।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামের নামে মামলা করেছে দুদক।
শনিবার (৮ জুন) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন, গোপালগঞ্জের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের পুকুরের মাছসহ বিভিন্ন সম্পদ চুরি হচ্ছে বলে দুদক কর্মকর্তারা খবর পান। বিষয়টি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেন। এরপর দুদকের একটি টিম শুক্রবার (৭ জুন) গভীর রাতে সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে যায়। তখন রিসোর্টের ভেতরে ২০ একরের একটি পুকুর থেকে মাছ ধরতে দেখেন তারা।
তিনি আরও বলেন, দুদক টিম আসার খবর পেয়ে আসামিসহ অন্যরা পালিয়ে যান। এ সময় ৫৫৫ কেজি তেলাপিয়া ও সাড়ে ৩৭ কেজি কাতলা মাছ জব্দ করা হয়। পরে তা নিলামে তুলে ৮৩ হাজার ৭৫৪ টাকায় বিক্রি করা হয়। ওই অর্থ সরকারি খাতে জমা দেওয়া হয়েছে।
দুদকের ওই কর্মকর্তা বলেন, মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রিসোর্টের দায়িত্বরত মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামের নির্দেশে তারা মাছ ধরেছেন। এ ঘটনায় সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামকে আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সোহরাব হোসেন সোহেল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালে র্যাবের মহাপরিচালক এবং ২০২০ সাল থেকে থেকে ২০২২ পর্যন্ত আইজিপি থাকাকালীন বেনজীর আহমেদ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। এ পার্কের জমির প্রায় সবই হিন্দু সম্প্রদায়কে ভয় দেখিয়ে, জোর করে এবং নানা কৌশলে কেনা হয়েছে। এছাড়া অনেক জমি দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।