শুধু বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলা নয়, ‘বাজবল’ মানে দর্শকদের বিনোদন দেওয়া, ক্রিকেটারদের মানসিকতায়ও আক্রমণাত্মক ছাপ থাকা। ইংলিশ ওপেনার জ্যাক ক্রলির কথাই ধরুন না, বয়স মাত্র ২৫, খেলেছেন ৩৫টি টেস্ট। অভিজ্ঞতার বিচারে পিছিয়ে আছেন অনেকের চেয়েই।
তাতে কী! এজবাস্টন টেস্ট হারার পরও কণ্ঠে কোনো ভয়ভীতি, দ্বিধাদ্বন্দ্ব কিছুই নেই। টাইমস রেডিওতে লর্ডস টেস্ট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সরাসরি বলেই দিয়েছেন, দ্বিতীয় টেস্টে জিতবে ইংল্যান্ড। আর সেটা হতে পারে ১৫০ রানের ব্যবধানে! এজবাস্টনে অমন হারের পর যখন ইংল্যান্ডের সমালোচনা চলছে, ক্রলি এমন ঘোষণা দিলেন তখনই!
এজবাস্টনে টেস্ট ২ উইকেটে হারলেও ম্যাচের অনেকটা সময় নিয়ন্ত্রণে ছিল ইংল্যান্ড। আর সেটি আক্ষরিক অর্থেই শুরু হয়েছিল ক্রলির ব্যাটিংয়ে। এবারের অ্যাশেজের প্রথম বলেই প্যাট কামিন্সের বলে কাভার দিয়ে চার মেরে শুরু করেছিলেন ক্রলি। প্রথম ইনিংসে ৮৩.৫৬ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৬১ রান।
তা–ও এজবাস্টনের ধীরগতির উইকেটে। এই আত্মবিশ্বাস থেকেই বোধ হয় ক্রলি বলছেন ২৮ জুন থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের কথা, ‘আমার মনে হয় আমরা লর্ডসে জিতব, ওখানকার উইকেট আমাদের খেলার সঙ্গে মানানসই। তাই আমার মনে হয়ে আমরা জিতব…জানি না…১৫০ রানে?’
অবশ্য ইংল্যান্ডকে তাড়া করতে হলে ব্যবধান কত হবে, সেটি বলেননি ক্রলি।
‘বাজবল’ প্রথাগত টেস্ট ক্রিকেটের চিত্রনাট্য ভেঙে নতুন কিছু করার চেষ্টা করছে। ইংল্যান্ড বারবারই বলে আসছে, গ্যালারির দর্শকদের বিনোদনের কথা মাথায় রেখে খেলে তারা। দিন শেষে এই বাজবলের মূলমন্ত্র একটাই, জয়–পরাজয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে ‘বিনোদন’ দেওয়া।
ইংলিশ ওপেনার ক্রলি যেন সেই কথাগুলো আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন, ‘আমরা ফলাফল নিয়ে ভাবি না। জয়–পরাজয় নয়, আমরা ভাবি বিনোদন নিয়ে। অবশ্যই আমরা জেতার জন্যই খেলি, এটা আমরা যে কৌশলে খেলি সেই ব্র্যান্ডের মান আরও বাড়ায়। জিতলে আকর্ষণ বাড়ে। একটা ম্যাচ ছাড়া (অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট) এই সপ্তাহে আমরা কিছুই হারাইনি। আর আমরা সম্মান অর্জন করেছি। অনেক সমর্থনও পেয়েছি, যেটা খেলার জন্য ভালো।’
প্রথম ম্যাচ হারার পর ইংল্যান্ডের কৌশলের সমালোচনা কম হচ্ছে না। যদিও সেই টেস্টের পর ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি হয়ে যতজনই কথা বলেছেন, কেউই সেসব খুব একটা গায়ে মাখছেন বলে মনে হয়নি।
ক্রলিও বলছেন, গণমাধ্যমের তীক্ষ্ণ নজরের চাপের চেয়েও সতীর্থদের জন্য খেলা ও দ্রুতগতিতে রান তুলে দলকে ভালো শুরু এনে দেওয়ার চাপটাই তাঁর কাছে বেশি, ‘মাঠে নামলে এ সব চাপ ঠিক থাকে না। চাপ থাকে সতীর্থদের জন্য খেলা ও ওপেনার হিসেবে আপনার কাজ দলকে ভালো শুরু এনে দেওয়ার ক্ষেত্রে। ভালো শুরু করা ও দ্রুত রান তোলার চাপটাই অনুভব করি। মিডিয়ার সমালোচনা বা এমন চাপের চেয়ে আসলে এই চাপটাই বেশি অনুভব করি। সুতরাং আমি বেশ চাপেই ছিলাম। কিন্তু আমি ভেবেছি, দলকে ভালো একটা শুরু এনে দেওয়ার চেষ্টাই করব। আমি সব সময়ই ইতিবাচক ছিলাম।’