ট্রাম্পের ‘কানাডা দখলের চেষ্টা’ সফল হবে না, বিজয় ভাষণে কার্নি

ট্রাম্পের ‘কানাডা দখলের চেষ্টা’ সফল হবে না, বিজয় ভাষণে কার্নি

কানাডার ৪৫তম জাতীয় নির্বাচনের জয়লাভ ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টি। বিজয়ী ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক হাত নিয়েছেন কার্নি।

সমর্থকদের তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন যাতে আমেরিকা আমাদের দখল করতে পারে। কিন্তু এটা কখনোই ঘটবে না।

তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, কানাডা কেবল একটি জাতি নয়, এর চেয়েও বেশি কিছু। আমরা একসঙ্গে আছি এবং সবসময় একটি ফেডারেশন হিসেবে থাকবে। আমরা নিখুঁত নই, তবে ভালোর জন্য চেষ্টা করি।  সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও কানাডাবাসীর ওপর আমার বিশ্বাস আছে।

তিনি আরও বলেন, কানাডার শক্তি আমাদের ঐক্য এবং একসঙ্গে কাজ করার মানসিকতায় নিহিত।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী ও লিবারেল পার্টি প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান জাস্টিন ট্রুডো। তার স্থলাভিষিক্ত হন ব্যাংক অব কানাডা ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক গভর্নর মার্ক কার্নি।

তার নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি সোমবার (২৮ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এতে দলটি পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে প্রয়োজনীয় ১৭২টি আসনের বিপরীতে ১৬৮টি জয় প্রায় নিশ্চিত করেছে। ফলে তারাই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। অন্যদিকে লিবারেলদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল কনজারভেটিভ পার্টি এখন পর্যন্ত ১৪৪টি আসন নিশ্চিত করতে পেরেছে। এই দলের প্রচারমুখ ছিলেন পিয়েরে পয়েলিয়েভর।

কানাডার এবারের নির্বাচনী প্রচারণা ছিল উত্তপ্ত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে ৫১তম রাজ্য হিসেবে যুক্ত করার হুমকি দেশজুড়ে ক্ষোভের জন্ম দেয়। এমন প্রেক্ষাপটে কানাডার সার্বভৌমত্ব রক্ষার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন কার্নি। মার্চে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা আমাদের ঘরের কর্তা। কোনো শক্তিকে আমাদের দুর্বল করতে দেব না।

মার্ক কার্নি কে

কার্নির রাজনৈতিক উত্থান নাটকীয়। মাত্র কয়েক মাস আগে জানুয়ারিতে জনপ্রিয়তার ভাটা আর মন্ত্রিসভার বিদ্রোহের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দলের অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জিতে মার্চে প্রধানমন্ত্রী হন কার্নি, যিনি এর আগে একজন প্রভাবশালী ব্যাংকার ছিলেন।

২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দা এবং যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিটের জটিল সময়ে কানাডার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখার অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগিয়েই তিনি কানাডিয়ান ভোটারদের কাছে আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেন। হোয়াইট হাউস থেকে ঘোষিত শুল্কের ঝড়ে যখন দেশটির অর্থনীতি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে, তখন অনেক কানাডিয়ান নির্ভরযোগ্য নেতৃত্বের খোঁজ করছিলেন— আর সেই মুহূর্তে নিজের সফল অর্থনৈতিক নেতৃত্বের গল্প তুলে ধরেন কার্নি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS