ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সৌদিতে আলোচনা দুই পরাশক্তির

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সৌদিতে আলোচনা দুই পরাশক্তির

সৌদি আরবে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় বের করতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুরু হয়েছে।  

মার্কিন পক্ষ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই বৈঠকটি মূলত আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর জন্য নয় বরং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়া কতটা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ভূমিকা নিতে প্রস্তুত, তা যাচাই করার জন্যই আয়োজিত।অন্যদিকে, রাশিয়া বলছে যে তাদের মূল লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা।

এই বৈঠকটি কতটা গোপনীয় হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি এবং আলোচনার সম্ভাব্য দিকগুলো নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

কে কে আছেন আলোচনার টেবিলে?

বৈঠকে রাশিয়ার পক্ষে রয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। যিনি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের বৈদেশিক নীতির মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আরও রয়েছেন ইউরি উশাকভ। তিনি পুতিনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যিনি এই বৈঠকে মার্কিন পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আরও রয়েছেন মাইক ওয়াল্টজ। তিনি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বন্ধু স্টিভ উইটকফ।

মধ্যস্ততাকারী হিসেবে সৌদি আরবের পক্ষে রয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ। তিনি এই বৈঠকের আয়োজক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। আরও রয়েছেন সৌদি আরবের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুসায়েদ বিন মোহাম্মদ আল-আইবান।

সৌদি আরবের কৌশলগত ভূমিকা

সৌদি আরব আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার ভূমিকা বাড়ানোর জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়ে তারা রাশিয়া ও চীনের মতো দেশগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলেও সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের উপর তাদের ঐতিহাসিক নির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন সৌদি আরবের জন্য একটি ইতিবাচক সংবাদ হতে পারে, কারণ ট্রাম্প প্রশাসনের সময় দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

আলোচনার সম্ভাব্য ফলাফল

এই বৈঠকটি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান এবং মার্কিন-রুশ সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এই আলোচনার মূল লক্ষ্য হলেও, উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থা তৈরি করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা কতটা সফল হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এটি নিঃসন্দেহে বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হবে।

আন্তর্জাতিক মহল এই আলোচনার ফলাফলের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে, বিশেষ করে ইউক্রেন সংকটের সমাধান এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে এটি কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।

সূত্র: বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS