লক্ষ্মীপুরে ভয়াবহ বন্যার কারণে অবকাঠামো ও খাদ্য বিনষ্টসহ খামারি-গৃহস্থদের পশুপাখি মারা গেছে।
এতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।এখনও ৫ লাখ ১১ হাজার ১১০টি পশু-পাখি বন্যা কবলিত রয়েছে। এতে খামারিসহ গৃহস্থরা বড় ধরনের আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েছেন।
লক্ষ্মীপুর প্রাণিসম্পদ বিভাগের ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদনের মাধ্যমে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, বন্যার অতিরিক্ত পানির কারণে লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্নস্থানে খামার ও গৃহস্থের ১ লাখ ৬০ হাজার ২১৩টি পশুপাখি মারা গেছে। এর মধ্যে ৩৫টি গরু, ১৭৫টি ছাগল, ১৭টি ভেড়া ও একটি মহিষ এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০টি মুরগি ও ৯৭৫টি হাঁস মারা গেছে। এতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। গবাদিপশুসহ ৩০৩টি খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি ৭৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা, হাঁস-মুরগিসহ ৪২৩টি খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এছাড়া ১ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার পশুপাখির খাদ্য বিনষ্ট হয়েছে বন্যায়।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এতে আরও জানানো হয়েছে, ৯০০ গবাদিপশু ও ১২ হাজার ৯০০ হাঁস-মুরগিকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ৮৪১টি গবাদিপশু ও ৩০ হাজার ৩৬৫টি হাঁস-মুরগিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণে ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগরে ১৩ হাজার ৭৯০ একর জমি প্লাবিত হয়েছে। মেঘনা উপকূলীয় এ জেলায় প্রথমে ভারী বর্ষণ ও নদীর জোয়ারের কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। প্রথমে রামগতি ও কমলনগরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানিবন্দি ছিল। গত ২৩ আগস্ট থেকে ফেনী-নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে চাপ দেয়। এতে লক্ষ্মীপুরের জলমগ্ন হয়ে পড়ে প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ। চারদিকে পানি থই থই। অনেক এলাকায় কোমর-গলা সমান পানি রয়েছে। ঘর-বাড়ির ভেতরেও পানি। এতে পানি ও আবহাওয়াজনিত কারণে ১ লাখ ৬০ হাজার ২১৩টি পশুপাখি মারা যায়।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র বলেন, বন্যা জলাবদ্ধতার কারণে লক্ষ্মীপুরে ৩০৩টি গবাদিপশুর ও ৪২৩টি মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক গবাদিপশু ও মুরগি মারা গিয়ে খামারিদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এ থেকে উত্তরণে মাঠ পর্যায়ে আমাদের লোকজন কাজ করছেন। এখনও ৫ লাখ ১১ হাজার ১১০টি পশুপাখি বন্যাকবলিত রয়েছে।