ভোজ্যতেল ও চিনির সরবরাহ ঘাটতির মধ্যেই বেড়েছে দাম। সরকারের নির্ধারিত দর প্রতি কেজি ১০৪ টাকা হলেও ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে চিনি। প্যাকেট চিনি বলতে গেলে উধাও। এরই মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানাগুলোর সমিতি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এ মূল্য নির্ধারণ করে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্যাকেটজাত চিনি খুব একটা নেই। খোলা চিনি পাওয়া গেলেও সরকারের নির্ধারিত (১০৪ টাকা) দরের তোয়াক্কা করছেন না ব্যবসায়ীরা। দোকানিদের কথায়, সব শেষ ঈদের আগে মোকাম থেকে ১৩০ টাকায় চিনি কিনতে হয়েছে।
প্রতি কেজি চিনি কিনতে ভোক্তাদের গুনতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এ ছাড়া নতুন মোড়কের তেল না এলেও কেউ কেউ প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৯৯ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৯৬০ টাকায় বিক্রি করছে।
ভ্যাট ছাড় সুবিধা উঠে যাওয়ার পরদিন থেকেই বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয় সয়াবিন তেলের। এরপরই লিটারে ১২ টাকা দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। অথচ আমদানিকারকদের মিলে ও বাজারে যেসব ভোজ্যতেল রয়েছে সেগুলো আগের ওই ভ্যাট ছাড়ের সুবিধায় আমদানি করা। সুতরাং এখন সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো একেবারেই অমানবিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. রহমত উল্লাহ বলেন, বেশির ভাগ দোকানেই প্যাকেট চিনি নেই। খোলা চিনি বিক্রি করছি। এ ছাড়া কোম্পানিগুলো এখনও নতুন তেল সরবরাহ করেনি। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। তাই বাড়তি দামেই বিক্রি করছি।
সরকারের বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান টিসিবির তথ্যানুসারে চিনি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। গত এক মাসে দাম বেড়েছে ১৯ শতাংশ। আর ভোজ্যতেল বিক্রি হয়েছে খোলা প্রতি লিটার ১৬৮ থেকে ১৭৫ টাকা, এক লিটার ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা পাঁচ লিটার ৮৭০ থেকে ৮৯০ টাকা।
এদিকে গত ছয় মাস ধরে টানা বিশ্ববাজারে কমেছে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম। তাই দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমার কথা। অথচ না কমিয়ে উল্টো দাম বাড়িয়ে দেশের ভোক্তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। যখনই ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হলো সঙ্গে সঙ্গে ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীরা ঝাঁপিয়ে পড়লেন দাম বাড়াতে- এমনটাই উল্লেখ করেন বাজার বিশ্লেষক ব্যক্তিরা।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৯ টাকায় বিক্রি হবে। এতদিন এ দাম ছিল ১৮৭ টাকা। এ ছাড়া ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৬০ টাকা। এতদিন দাম ছিল ৯০৬ টাকা। এর মানে নতুন করে ৫ লিটারে বাড়ল ৫৪ টাকা, ১ লিটারে ১২ টাকা।
অন্যদিকে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের নতুন দাম হচ্ছে ১৭৬ টাকা। এতদিন প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৬৭ টাকায়। আর প্রতি লিটার খোলা পাম অয়েল বিক্রি হবে ১৩৫ টাকা করে।
উল্লেখ্য, সবশেষ গত বছরের ১৭ নভেম্বর দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল।