হঠাৎ করেই ক্র্যাম্প হলো গুলবাদিন নাইবের। ধারাভাষ্য কক্ষ তো বটেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে বিষয়টি নিয়ে ঠাট্টায় মেতে উঠলেন।এমন দৃশ্য বিরলই বলা যায়! একজন খেলোয়াড় চোটে কাতড়ালেও সবাই সেটাকে নাটক বা অভিনয় বলে মনে করছেন। জিম্বাবুয়ের ধারাভাষ্যকার পমি মবঙ্গোয়া তো গুলবাদিনকে অস্কার কিংবা এমি পুরস্কার দিতে বললেন।
ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের ১২তম ওভারে। বাংলাদেশের বিপক্ষে হারলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হতো আফগানিস্তানকে। আর সেমিফাইনালে উঠত অস্ট্রেলিয়া। এমন সময় বৃষ্টি পড়বে পড়বে ভাব। ডিএলএসের হিসেবে বাংলাদেশের রান তখন আফগানদের থেকে কম। তাই ডাগআউট থেকে খেলোয়াড়দের ধীরে খেলার সংকেত দেন আফগানিস্তান হেড কোচ জনাথন ট্রট।
সেই সংকেত চোখে পড়ে স্লিপে থাকা গুলবাদিনের। সঙ্গে সঙ্গেই পায়ের ব্যথায় পড়ে গেলেন তিনি। ডাক দেন ফিজিওকে। তার এমন কাণ্ডে অসন্তুষ্ট দেখা যায় আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। এরপর বৃষ্টি পড়লেও খেলা বেশিক্ষণ বন্ধ থাকেনি। সেই কাণ্ডের পর বোলিংয়ে এসে অবাক করে দেন গুলবাদিন। শুধু তা-ই নয়, ১৫তম ওভারে বোল্ড করেন তানজিম হাসানকে। পরে তো সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাসই গড়ে ফেলল আফগানিস্তান। তবে গুলবাদিনের ‘অভিনয়’ কারো চোখ এড়ায়নি।
তা নিয়ে ইএসপিএনক্রিকইনফোতে তামিম ইকবাল বলেন, ‘মানুষের হয়তো ভিন্ন মতামত থাকতে পারে। আমার মনে হয়, অনেকেই এমনটা করত। আবার অনেকে এমনটা করত না। তাই এটা ব্যক্তিগত বিষয়, আমি সেটাকে ভালো বা খারাপ কোনভাবেই দেখি না। আবেগের জায়গা থেকে ব্যাপারটি বুঝতে পারছি। যেভাবে তা সাজানো হয়েছে, এটা নিয়ে তর্ক হতে পারে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে সময় নষ্ট করাটা এবারই প্রথম দেখিনি আমরা এবং এটা শেষবারও নয়। এমনটা অনেকবার হয়েছে। ‘
নিউজিল্যান্ডের ধারাভাষ্যকার ইয়ান স্মিথ বলেন, ‘গত ছয় মাস ধরে আমার হাঁটুর অবস্থা খারাপ। ম্যাচশেষে আমি গুলবাদিন নাইবের চিকিৎসককে দেখাতে যাব। এই মুহূর্তে তিনি বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য। ‘
গুলবাদিনের ব্যাপারটি নিয়ে পরিষ্কারভাবে কিছু বলেননি রশিদও, ‘ তার ক্র্যাম্প হয়েছিল। আমি জানি না তার ঠিক কী কয়েছিল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কী হচ্ছে। তবে সেসব কোনো ব্যাপার নয়- এটা কেবলই অনফিল্ড ইনজুরি এবং এরপর কোনো ওভার হারাইনি। যখন বৃষ্টি আসে তখন উঠে পড়ি আমরা। এটা এমন কিছু নয় যা ম্যাচে বিশাল পার্থক্য বয়ে এনেছে। পাঁচ মিনিট পড়ই মাঠে নামি আমরা এবং এতে বড় কোনো পার্থক্য তৈরি হয়নি। আমার কাছে তা কেবল ছোটখাট এক ইনজুরি। ‘
সময় নষ্ট করা যেকোনো দলের জন্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে গুলবাদিনের সেই ‘অভিনয়’ দিনশেষে ম্যাচের ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি।