রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন মো. নূরুল হুদা নামের এক সাবেক শিক্ষার্থী। এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।পাশাপাশি এ পদক ফেরত দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে আইন বিভাগে এলএলবি ও এলএলএম পাস করা এই শিক্ষার্থী।
মো. নূরুল হুদার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানায়। তিনি ওই এলাকার মৃত অহর উদ্দীন ও রহিমা বেওয়ার ছেলে। তিনি ২০১৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল এল বি ও ২০১৫ সালে এল এলম পাস করেন। এল এল বি পরীক্ষায় আইন অনুষদ থেকে প্রথম স্থান অর্জন করায় ২০১৭ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক ও ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. নূরুল হুদা অভিযোগ করেন, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮ সালের ০৭/২০১৮ নং শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আইন বিভাগে আবেদন করার পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের শিকার হই। এর কারণে ওই নিয়োগে আমার চাকরি হয়নি।
নিয়োগের জন্য রাবি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন হয় এবং ওই নিয়োগ ওই বছরের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ৪৮৫তম সিন্ডিকেটে পাশ হয়। নিয়োগ বোর্ডের পূর্ব মুহূর্তে ৮ নভেম্বর নিয়োগ বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও রাবির তৎকালীন উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া আমার স্ত্রীকে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের প্রস্তাব দেন। এতে আমি রাজি হইনি। কিন্তু তার ভাগনে ও ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গাজী তৌহিদুর রহমান কৌশলে আমার কাছ থেকে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সুবিধা নেন। পাশাপাশি নিয়োগ বোর্ডের আরেক সদস্য ও আইন বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হান্নান ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নেন। এ বিষয়ে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও রাবির তৎালীন উপাচার্য আব্দুস সোবহানকে অবহিত করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং অভিযুক্তদের দিয়েই নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে আর্থিক লেনদেন, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমি রাবিসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করছি। আমি ইতোমধ্যে ইমেইলের মাধ্যমে এসব পদক ফেরত দেওয়ার কথা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও রাবি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে ডাকযোগে এসব পদক আমি ফেরত যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত পাঠাবো।