বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক রাতেই আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেবে, এই মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে শেখ হাসিনা হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। গরিব মানুষদের বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে জেতাতে হবে।’
আজ শনিবার মিরপুর-১ নম্বরের দারুস সালাম বালুর মাঠে আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভা ও দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ কর্মসূচি নেয় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের ওপর কোনো ধরনের প্রতিশোধ নেওয়া হবে না, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির মুখে মধু, অন্তরে বিষ। তারা বলে, ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের লোকজনের কোনো ক্ষতি হবে না। কী সুন্দর কথা! আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। তারা আবার ক্ষমতায় আসলে এক রাতের মধ্যে বাকিটা শেষ করে দেবে। এটা তাদের ভেতরের কথা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবির উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের কাছে জানতে চাই, শেখ হাসিনার বিকল্প প্রধানমন্ত্রী কে আছেন? তাঁর মতো জনদরদি নেতা কে আছেন? সব দলের কাছে জানতে চাই, শেখ হাসিনার চেয়ে যোগ্য নেতা কে আছে যে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারে? বিএনপি কাকে নেতা বানাবে?’
জনগণ কি শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায়, এই প্রশ্ন করে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আদালতের আদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কবরে ঘুমিয়ে আছে, সেটা কি দেশের জনগণ আর চায়? তাহলে বিএনপি কেন চাইছে?
শেখ হাসিনার বিকল্প নেই দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা হারলে বাংলাদেশ হেরে যাবে, গরিব মানুষ হেরে যাবে, স্বাধীনতা হেরে যাবে। তিনি হেরে গেলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হেরে যাবে। তাঁকে বিজয়ী করতে হবে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ খালি হাতে লড়বে। তবে আগুন নিয়ে এলে তা শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে।
বিএনপির তিনটি গুণ—‘দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মানুষ খুন’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কানাডার আদালত দলটিকে সন্ত্রাসীদের দল বলেছেন। তাদের হাতে রক্তের দাগ। মোশতাক ও জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অথচ তারা এখন মানবাধিকারের কথা বলছে! মনে হয়—তারা খাঁটি ফেরেশতা, তাদের মতো আর ভালো মানুষ নেই।’
গত ২৯ জুলাই বিএনপির ঢাকার প্রবেশমুখে অবরোধ কর্মসূচি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমানউল্লাহ আমান প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এসেছেন। ফলের রস খেয়ে সব ভুলে গেছেন। গয়েশ্বর কিশোরগঞ্জের কোরাল মাছ খেয়ে খুশি হয়েছেন। কিছু প্যাকেট বাড়িতেও নিয়ে গেছেন। এগুলো ওপেন, ছবি আছে।’
মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেখলে ‘বিদেশে আছি’ মনে হয়—উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেন। সামনে তারা (বিএনপি) অন্ধকার দেখবে, তাদের ভোট দিলে দেশ গিলে খাবে। তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান বানাবে। সেই ধান্দায় আছে তারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, আগা খান, মিজানুর রহমান, এ বি এম মাজহারুল আনাম, আবুল হাসানাত, গিয়াস উদ্দিন, উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার প্রমুখ।