নির্বাচনের কয়েক মাস বাকি। এখনো বিএনপি বিদেশিদের কাছে নালিশে মগ্ন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিদেশিরা ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে, এই আশায় তাকিয়ে আছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথ সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন আর তিন-চার মাস বাকি। গুজবে, গুঞ্জনে, ষড়যন্ত্রে নির্বাচন অঙ্গন ক্রমে সংঘাতময় করে তোলার চক্রান্ত চলছে। তারা সংঘাতের উসকানি দিচ্ছে, দিয়েছে। এই মুহূর্তে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো ভোটারদের কাছে যাচ্ছে না। বিএনপি বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে, কার ওপরে ভিসা নীতি প্রয়োগ হয়। পত্রপত্রিকায় দেখা যাচ্ছে, প্রতিনিধিদল আসছে।
বিএনপি ভাবছে, প্রতিনিধিদল এসেই সরকারকে নিষেধাজ্ঞা দেবে, ভিসা নীতি দেবে। তারা দিবাস্বপ্ন দেখছে। তারা এখনো নালিশের মধ্যে নিমগ্ন। নালিশটা জনগণের কাছে নয়, বিদেশিদের কাছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিদেশিরা আমাদের বন্ধু। তাদের কিছু বলার থাকলে আমাদের কাছে বলতে পারে। সেটা বন্ধুসুলভ আচরণ। এখানে কোনো প্রভুত্বের কিছু নেই। বিএনপি প্রভুদের কাছে নালিশ করে, বন্ধুদের কাছে নালিশ করে না। সব পরামর্শ আমাদের গ্রহণ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।’
আওয়ামী লীগ সংবিধান মেনে চলে জানিয়ে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারে থাকব অথবা বিরোধী দলে। চিরজীবন আমরা সরকারে ছিলামও না, অথবা না–ও থাকতে পারি। বিরোধী দলে গেলেও আমরা সংবিধান মেনে চলি।’
ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল জাতীয় সংসদে পাস হওয়াকে অত্যন্ত যুক্তিসংগত ও ন্যায়সংগত বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচনে একটি বা দুটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হলে এই একটি–দুটি কেন্দ্র বন্ধ হতে পারে। কিন্তু গোটা নির্বাচন কেন বন্ধ করতে হবে? এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে আছে নাকি, আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই। এ আইনে সে বিষয়টাই স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পৃথিবীর সব দেশে এ রকম, আমাদের কেন ভিন্ন কিছু করতে হবে।’
সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রচার চলছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ না নিয়ে বিরোধী দলগুলো অপপ্রচার করছে। প্রতিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। জনগণ লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিয়েছেন। বিএনপি ও তাদের বন্ধুরা নির্বাচনে যোগ না দেওয়ার পরও বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ, ছোটখাটো আরও কিছু দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন। ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে এসব নির্বাচনে।
যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম; সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী; সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, উপপ্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আবদুল আউয়াল শামীম, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ। এ ছাড়া যৌথ সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী সংগঠনের র্শীষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।