প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা, খারাপ সপ্তাহ পার করল এশিয়ার শেয়ারবাজার

প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা, খারাপ সপ্তাহ পার করল এশিয়ার শেয়ারবাজার

সপ্তাহটা ভালো যায়নি এশিয়ার শেয়ারবাজারের। আজ শুক্রবার শেষ হতে যাওয়া সপ্তাহটি বছরের সবচেয়ে খারাপ ছিল বলে উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে এবং মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে।

রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বাজারের টালমাটাল পরিস্থিতির পেছনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তের কারণে এমনটা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তারা যেভাবে যুদ্ধংদেহী অবস্থান নিয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা এসব পদক্ষেপের অর্থনৈতিক পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।

জাপান ছাড়া এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় সূচক প্রণয়ন করে এমএসসিআই। এ বছর এই সূচকের পতন হয়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ; চলতি সপ্তাহেই পতন হয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। চীনের শেয়ারবাজার বন্ধ ছিল, তবে হংকংয়ের শেয়ারবাজারে লেনদেন হলেও সূচকের পতন হয়েছে ২ শতাংশ।

জাপানের নিক্কি এশিয়া সূচকের পতন হয়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ, যদিও পতন আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্সের পয়েন্ট আগের দিন বাড়লেও আজ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট হারিয়েছে। ইউরোপিয়ান ফিউচার্সের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ।

অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরের স্টক ব্রোকার অ্যাগ্রোনাটের প্রতিনিধি ড্যামিয়েন রুনি রয়টার্সকে বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে আমরা যে পরিস্থিতি দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে, ফেড আবারও নীতি সুদহার বাড়াতে যাচ্ছে আর ব্যাংক অব ইংল্যান্ড যে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি, অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করল, সেটা নৈমিত্তিক বা সাধারণ ঘটনা হলেও বড় প্রভাব পড়বে।’

বাজার মনে করছে, চলতি বছর যুক্তরাজ্যের নীতি সুদহার ৬ শতাংশে উঠতে পারে। তবে ব্রিটিশ মুদ্রা পাউন্ডের ওপর তার প্রভাব ছিল সাময়িক, কারণ বাজারে এই ইঙ্গিত যাওয়ার পর দ্রুতই পাউন্ডের দরপতন হয়। সেই সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকারি বন্ডের সুদহার, অর্থাৎ গিল্টস কমে গেছে। এসব কিছুর একমাত্র কারণ হচ্ছে নীতি সুদহার বৃদ্ধি; বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

বিষয়টি হলো, নীতি সুদহার বাড়লে ব্যাংক ঋণের সুদহারও বাড়ে, ফলে সমাজে মুদ্রার প্রবাহ কমে যায়। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে।

এদিকে চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিও ভালো নয়। পালে যে হাওয়া লাগবে, তেমন প্রণোদনাও কম। এ ছাড়া সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে আরও দুবার নীতি সুদহার বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে সারা বিশ্বেই প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

প্রবৃদ্ধির প্রক্সি হিসেবে পরিচিত তেল ও অস্ট্রেলীয় ডলারেরও এক শতাংশ করে দরপতন হয়েছে আজ। ব্রেন্ট ক্রুডের দর ব্যারেলপ্রতি ৭২ ডলারে নেমে এসেছে।

আজ শুক্রবার ইউএস ডলার ইনডেক্স শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে এবং এক মাসের মধ্যে এই প্রথম সাপ্তাহিক প্রবৃদ্ধির পথে আছে।

অন্যদিকে নীতি সুদহার আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনার কারণে সোনার দামে প্রভাব পড়েছে। সোনার দাম তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে, আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৯১০ ডলার।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS