ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যাচেষ্টা ও শ্লীলতাহানির মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক গৃহবধূ। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলা শহরের বাইপাস সড়কে একটি বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান গৃহবধূ জাহানুর বেগম। তিনি উপজেলার বিন্দুঘোষ গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে জাহানুর বেগম বলেন, জমিজমা নিয়ে একই গ্রামের মোসলেম আলী হাওলাদারের ছেলে পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবির, রবিউল ইসলাম ও আনসার সদস্য হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর পরিবারের বিরোধ রয়েছে। গত ঈদুল ফিতরের সময় ওই তিনজন ছুটিতে বাড়িতে আসেন। গত ২৪ এপ্রিল দুপুরে বিন্দুঘোষ গ্রামের হাওলাদার বাড়ির সেতুর ওপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় সালিশ চলাকালে তাঁরা তিন ভাই ও তাঁদের স্ত্রী-সন্তানেরা দেশীয় অস্ত্র, রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের (জাহানুর) পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে পাঁচ থেকে ছয়জনকে জখম করেন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তাঁর (জাহানুরকে) শ্লীলতাহানি করেন। এ সময় চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা চলে যান। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তাঁর স্বামী তোফাজ্জল হোসেন ও দেবর ওমর ফারুক রাকিবের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদের বরিশাল শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জাহানুর বেগম বলেন, ওই দিন হামলার খবর শুনে নলছিটি থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও হামলাকারীরা পুলিশে কর্মরত থাকার বিষয়টি জেনে তাঁদের আটক করেনি। এরপর তিনি নলছিটি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা শেষে গত ২ মে তিনি বাদী হয়ে ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি মামলার আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নালিশি আবেদনটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা নিলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার করেনি। মামলায় পুলিশ সদস্য দুই ভাই হুমায়ুন কবির ও বরিউল ইসলাম এবং আরেক ভাই আনসার সদস্য হেমায়েত উদ্দিনসহ ১১ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। কয়েকজন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন। মামলার মূল আসামিরা জামিন না নিয়ে নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে চাকরি করছেন। স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে মামলা তুলে আসামিদের সঙ্গে আপোস করার পরামর্শ দিয়েছেন।
জাহানুর বেগম আরও বলেন, ওই দুই পুলিশ সদস্য তাঁর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে হয়রানি করে আসছেন। ওই দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকায় কর্মরত স্পেশাল ব্রাঞ্চের সহকারী উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য নিতে কয়েকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নলছিটি থানার উপপরিদর্শক তানজিলুর রহমান বলেন, মামলার পাঁচজন আসামি জামিনে আছেন। অন্য আসামিরা তাঁদের কর্মস্থলে রয়েছেন। এলাকায় না থাকায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি।