আধুনিক জীবনে ফ্রিজ একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। তবে ছোটখাটো কিছু ভুলের জন্য ফ্রিজের কর্মক্ষমতা কমে যায়। এমন সমস্যায় আমাদের প্রায়ই পড়তে হয়। হঠাৎ ফ্রিজ নষ্ট হয়ে যাওয়াটা যেকোনো গৃহিণীর জন্যই বিপর্যয়ের একটি মুহূর্ত। কারণ, গৃহিণী মাত্রই নিজের ফ্রিজ ভরে রাখেন সংসারের নানা প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানে। ফ্রিজ নষ্ট হয়ে যাওয়া মানে অনেকগুলো টাকার জিনিস একসঙ্গে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়া। তবে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। ব্যবহার্য জিনিসের এমন সমস্যা হতেই পারে। তার সমাধানও কঠিন নয়।
ফ্রিজের দরজা যত কম খুলবেন, ততই ফ্রিজের ভেতরের অবস্থা ভালো থাকবে। কিছু রাখার জন্য বারবার ফ্রিজ না খুলে একসঙ্গে গুছিয়ে সব একবারে রাখুন বা বের করুন। ফ্রিজের পেছনের দেয়ালে কোনো কিছু ঠেসে রাখা ঠিক নয়। এটি ফ্রিজের ক্ষতি করে। ফলে বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়। তা ছাড়া সবজি, মাছ, মাংসের জন্যও এটি ভালো নয়। সরাসরি গরম খাবার ফ্রিজে রাখা মোটেও ঠিক নয়। ওই খাবারকে ঠান্ডা করতে ফ্রিজকে বেশি শক্তি অপচয় করতে হয়। এ ছাড়া গরম খাবার থেকে ফ্রিজে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। তাড়াতাড়ি খাবার ঠান্ডা করার জন্য ফ্রিজের তাপমাত্রা দ্রুত কমানো বোকামি হবে। এতে ফ্রিজ নষ্টও হয়ে যেতে পারে। তাই জিনিস ঠান্ডা করার জন্য পরিমিত সময় দিতে হবে।
ফ্রিজের পেছনের কুলিং কয়েলে প্রচুর ধুলা জমলে শক্তির প্রবাহ কমে যায়। তাই কুলিং কয়েল সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। কাজটা একটু সাবধানে করবেন, যেন কয়েলের বাঁকা রেখাগুলোর কোনো ক্ষতি না হয়। ফ্রিজে বরফ বেশি রাখা যাবে না। অতিরিক্ত বরফ জমা হলে ফ্রিজের ঠান্ডা করার ক্ষমতা কমে যায়। তাই অতিরিক্ত বরফ জমা হলে দ্রুত সেগুলো সরিয়ে ফেলুন।
ফ্রিজে একটি এনার্জি বাল্ব সংযুক্ত করতে পারেন। এটি ফ্রিজে থাকা বাল্ব থেকে বেশি তাপ উৎপন্ন করবে। ফলে ফ্রিজের কর্মক্ষমতা বাড়বে। এ ক্ষেত্রে লেড লাইট ভালো কাজ করে। ঘরের দেয়ালের সঙ্গে ফ্রিজকে ঠেসে রাখবেন না। দেয়াল থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। এতে ফ্রিজ কম শক্তিতে বেশি ঠান্ডা করতে পারবে। ফ্রিজকে অবশ্যই তাপ উৎপন্নকারী বস্তু থেকে দূরে রাখুন। বিশেষ করে চুলা, স্টোভ, ওয়াটার হিটার থেকে দূরে রাখা উচিত। এমন জায়গায় ফ্রিজ রাখবেন না, যেখানে ঠিকমতো বাতাস পৌঁছায় না। এতে ফ্রিজকে খুব বেশি শক্তি ব্যয় করতে হবে। ফলে খুব দ্রুতই ফ্রিজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া ফ্রিজের সাধারণ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিচলিত না হয়ে এই সমস্যাগুলো সহজেই সমাধান করা যায়। আপনার ফ্রিজ যদি ভালোভাবে ঠান্ডা না হয়, তাহলে ফ্রিজে থাকা খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অনেকে সময় বিদ্যুতের সংযোগ ঠিকমতো লাগানো না থাকলে ফ্রিজ ভালোভাবে ঠান্ডা হয় না। বিদ্যুতের সংযোগটি ভালো চেক করুন মাঝে মাঝে। ফ্রিজ বেশি ভরা থাকলে অনেক সময় ফ্রিজের দরজা লাগাতে সমস্যা হয়। বরফ জমে যাওয়ার কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে দরজা লাগানো না গেলে জোর করে লাগানোর চেষ্টা করা উচিত নয়।
ফ্রিজে অনেক সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শব্দ হয়। এতে বাসার মানুষের ঘুমসহ নানা সমস্যা হতে পারে। শব্দের সমস্যাটি যদি অল্প সময়ের জন্য হয়, তাহলে ভয়ের কিছু নেই। আর এটি যদি সারাক্ষণই হতে থাকে, তাহলে দক্ষ টেকনিশিয়ানের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। অনেক সময় আমরা দেখি ডিপ ফ্রিজে বরফের স্তূপ জমে থাকে। ফ্রিজ যেখানে প্রতিদিনের কাজের ঝামেলা কমিয়ে স্বস্তি এনে দেওয়ার কথা, সেখানে দেখা যায় উল্টো বিড়ম্বনা। অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমানো থাকলে ডিপ ফ্রিজে বরফের স্তূপ জমে যায়। তাই তাপমাত্রা ঠিক রাখতে হবে। ফ্রিজে এমন বরফের স্তূপ জমলে তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।