চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে কখনোই হারেনি কোন কোন দল

চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে কখনোই হারেনি কোন কোন দল

আর মাত্র কয় দিন পরেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি ও ইন্টার মিলান। ইস্তাম্বুলে ইউরোপ-সেরার লড়াইয়ে ২০১০ সালের পর এই প্রথম খেলবে ইন্টার। সিটি অবশ্য ২০২১ সালে ফাইনালে খেলেছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের শিরোপা জেতা হয়নি। তবে ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের এই প্রতিযোগিতার ফাইনালের প্রসঙ্গ এলে নটিংহাম ফরেস্ট, পোর্তো, অ্যাস্টন ভিলা, রেডস্টার বেলগ্রেড, ফেইনুর্দ ও পিএসভি আইন্দহফেন—এই ক্লাবগুলোর নাম বিশেষভাবেই নিতে হবে। ফাইনালে এই ক্লাবগুলোর হারের যে কোনো ইতিহাসই নেই।

১৯৯২ সালে ইউরোপের এই ক্লাব প্রতিযোগিতার নামকরণ করা হয় চ্যাম্পিয়নস লিগ। ৬৮ বছরের পুরোনো এই ক্লাব প্রতিযোগিতা ’৯২–এর আগে ইউরোপিয়ান কাপ নামে পরিচিত ছিল। ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের এই প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক ১৭ বার ফাইনালে খেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এর মধ্যে ১৪ বারের শিরোপাজয়ী তারা। কিন্তু নটিংহাম ফরেস্ট, পোর্তো, অ্যাস্টন ভিলা, রেডস্টার বেলগ্রেড, ফেইনুর্দ কিংবা পিএসভি আইন্দহফেনকে ফাইনালের শতভাগ রেকর্ডের জন্য রিয়াল মাদ্রিদের ঈর্ষা তারা পেতেই পারে।

ইংলিশ ক্লাব নটিংহাম ফরেস্ট ১৯৭৮-৭৯ ও ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে টানা দুইবার ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে খেলেছিল। দুইবারই তারা শিরোপা জয় করে। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে মালমোকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে তারা। পরের মৌসুমে তারা হামবুর্গকে ওই একই ব্যবধানে (১-০) গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে।

২০০৩-০৪ মৌসুমে জোসে মরিনিওর কোচিংয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছিল পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তো। ফাইনালে মোনাকোকে ৩-০ গোল হারায় তারা। দলটি প্রথম ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের ফাইনালে উঠেছিল ১৯৮৭ সালে, চ্যাম্পিয়নস লিগ নামকরণের পাঁচ বছর আগে। ভিয়েনার সেই ফাইনালে পোর্তো ৩-১ গোলে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে হয়েছিল ইউরোপ-সেরা। নটিংহাম ফরেস্ট ও পোর্তোর মতো শতভাগ ফাইনাল জেতা ক্লাবগুলোর মধ্যে আছে আরেক ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাও। তারা একবারই ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেছিল ভিলা। সেই ১৯৮১-৮২ মৌসুমে। মজার ব্যাপার হচ্ছে ফাইনালে ভিলার শিকারের নামও বায়ার্ন মিউনিখ। রটার্ডামের ফাইনালে ১-০ গোলে জিতেছিল অ্যাস্টন ভিলা।

সাবেক যুগোস্লাভিয়ার (বর্তমানে সার্বিয়া) রেডস্টার বেলগ্রেড এক সময় ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে বড় শক্তি হিসেবে পরিচিত ছিল। দলটি ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেছিল ১৯৯০-৯১ মৌসুমে। একবারই। সেবার ইতালির বারির ফাইনালে মার্শেইকে টাইব্রেকারে (৫-৩) হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল তারা। নেদারল্যান্ডসের ক্লাব পিএসভি আইন্দহফেন ফাইনালে শতভাগ জয়ের রেকর্ডের আরেকটি ক্লাব। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে একবারই খেলেছিল তারা। সেবার বেনফিকাকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছিল তারা।

এই কয়েকটি ক্লাবের বাইরে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে সবচেয়ে বেশি জয়ের হার রিয়াল মাদ্রিদের। ১৭ বার ফাইনাল খেলা রিয়াল শিরোপা জিতেছে ১৪ বার। হেরেছে তিনটি ফাইনালে। ফাইনাল জেতার হার ৮২.৪ শতাংশ। ৬টি ফাইনাল খেলা আয়াক্স আমস্টারডামের রেকর্ড রিয়ালের পরপরই—৬৬.৬ শতাংশ। জিতেছে ৪ ফাইনাল, হেরেছে ২টিতে। একই হার চেলসিরও—৬৬.৬ শতাংশ। ৩টি ফাইনাল খেলে দুটিতে জিতেছে তারা। ১১টি ফাইনাল খেলা এসি মিলান জিতেছে ৭টিতে, হেরেছে ৪টি। ফাইনাল জেতার হার—৬৩.৬ শতাংশ। বার্সেলোনা ৮টি ফাইনাল খেলে জিতেছে ৫টিতে, হেরেছে ৩টিতে। ফাইনাল জয়ের হার—৬২.৫ শতাংশ।

১৯৯২ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ নাম হওয়ার পর এই প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশিবার শিরোপা রিয়াল মাদ্রিদের—৮টি। বার্সেলোনা জিতেছে ৪ বার। তিনবার করে জিতেছে এসি মিলান ও বায়ার্ন মিউনিখ। দুইবার করে শিরোপা জিতেছে লিভারপুল, চেলসি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS