হাইলাইন ডিফেন্স নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন মালয়েশিয়ার কোচ

হাইলাইন ডিফেন্স নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন মালয়েশিয়ার কোচ

ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ মালেয়শিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। ১-০ গোলে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্বাগতিকদের। আফঈদা-শিউলিদের হাইলাইন ডিফেন্স খেলার কৌশলের কথা আগে থেকেই জানতেন মালয়েশিয়ার কোচ জোয়েল কর্নেলি। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে।

অন্যদিকে ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে আগ্রাসী মনোভাবে দেখা গেল বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলারের। হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে দলের বাইরে থেকে মানুষজন দলকে প্রভাবিত করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 

আজ ম্যাচের আগে আলোচনায় ছিল বাটলারের হাইলাইন ডিফেন্স। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন হাইলাইন ডিফেন্সেই খেলবেন তিনি। অন্যদিকে এই কৌশলে বারবারই ভুগতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এটা জানা ছিল মালয়েশিয়ার কোচের।

সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার কোচ জোয়েল বলেন, ‘ভাগ্য? না, কোনোভাবে না। আমরা এটা নিয়ে অনেক কাজ করেছি। এটা ভাগ্যের ব্যাপার ছিল না। ভিডিও বিশ্লেষণ করে আমরা জানতাম বাংলাদেশ ডিফেন্স লাইন খুব উঁচুতে রাখে এবং প্রেস করার চেষ্টা করে। তাই আমাদের পরিকল্পনা ছিল বল দখল করতে পারলেই উইঙ্গারকে ডায়াগোনাল রান করানো বা স্ট্রাইকারকে বাইরে এনে অন্যজনের জন্য ভেতরে ঢোকার জায়গা তৈরি করা। এই প্যাটার্ন থেকেই আমরা দুই-তিনটি সুযোগ সৃষ্টি করেছি। অবশ্যই বাংলাদেশও মানসম্পন্ন দল এবং তারা কিছু সুযোগ তৈরি করেছে। কিন্তু এটা ভাগ্য নয়, এটি আমাদের অনুশীলনের ফল।’

বাটলারের হাইলাইন ডিফেন্স ভাঙার কৌশল আগে থেকে রপ্ত করে এসেছিলেন মালয়েশিয়া কোচ। অন্যদিকে হারের কারণ হিসেবে দলের বাইরে থেকে দলকে ইন্ধন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাটলার। তিনি বলেন, সবার আগে দল নির্বাচন, ফলাফল, ভালো হোক বা খারাপ তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। এটা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই। তাই আমি অজুহাত দিতে আসিনি। আমার মনে হয়েছে দল দারুণ খেলেছে, আমরা খুব ভালো ফুটবল খেলেছি—যে ধরনের ফুটবল আমি আমার দলকে খেলাতে চাই। আমরা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। আমি গোলের জন্য কাউকে দোষারোপ করছি না। এটা আমাদের ডিফেন্ডিংয়ের কোনো ভুল ছিল না। যখন আপনি চাপ দিচ্ছেন, সুযোগ তৈরি করছেন এবং এমন দলের বিরুদ্ধে খেলছেন, যারা নিচে নেমে রক্ষণ করে, তখন ‘রিস্ক-রিওয়ার্ড’ থাকবেই।

‘আমি জানি এক-দু’জন খেলোয়াড় আজ কেন সেরা ফর্মে ছিল না। আর আমি নিশ্চিত এখানে কয়েকজন সাংবাদিকও সেটা জানেন। আমি শুধু এটুকু বলব, যখন দলের ভেতর বা বাইরে কিছু চরিত্র গোপনে কাজ করে দলকে নষ্ট করার চেষ্টা করে, তখন সাগরিকাদের মতো তরুণ খেলোয়াড়দের উন্নয়ন ঘটানো কঠিন হয়ে পড়ে। আমি ইংল্যান্ড থেকে এসেছি ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন কাঠামো। সেখানে খুব ছোট বয়স থেকে ভালো ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম আছে। আমি এখানে এসেছি কারণ আমি বাংলাদেশ ফুটবলকে সাহায্য করতে চাই, কিছু মানুষের মতো নয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বাটলারের কাছে জানতে চাওয়া হয় এশিয়ান কাপের মাত্র মাস তিনেক আগে আপনি বলছেন, কেউ বাইরে থেকে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে—এটা কি সুস্থ পরিবেশ? আপনি কীভাবে সামলাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বাটলার বলেন, ‘ধরুন, কেউ দল থেকে বাদ পড়েছে বিশৃঙ্খলার কারণে, আর আমি কোচ হিসেবে একটা সুস্থ পরিবেশ তৈরি করতে চাই, যা আমাদের দলে ৯০% আছে। দারুণ মেয়েরা আছে, উন্নতি করবে। বাংলাদেশ নারী ফুটবলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। কিন্তু যখন কিছু চরিত্র দলকে বাইরে থেকে নয়, ভেতর থেকেও ক্ষতি করতে থাকে তখন আমরা সমস্যায় পড়ব।’

পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন ১৮ নারী ফুটবলার। সেই ঘটনা এখন অতীত। সেখান থেকে অনেক ফুটবলারই জাতীয় দলে ফিরে এসেছেন। কিছু ফুটবলার এখনো জাতীয় দলে স্থান পাননি। বাইরে থেকে ইন্ধন দেওয়ার ব্যাপারে বাটলার সেইসব খেলোয়াড়দেরই ইঙ্গিত করেছেন হয়তো।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS