বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নতুন মৌসুম শুরু হতে না হতেই ক্লাবগুলোর ওপর ফিফার আর্থিক শৃঙ্খলার কঠোর বার্তা নেমে আসছে। বিদেশি ফুটবলার ও কোচদের বকেয়া পাওনা পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে একের পর এক ক্লাব ফিফার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে।
গত সপ্তাহে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব দলবদল নিষেধাজ্ঞার নোটিশ পাওয়ার পর এবার একই পরিস্থিতিতে পড়ল দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ঢাকা আবাহনী লিমিটেড।
ফিফার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৩ নভেম্বর থেকে আবাহনী নতুন করে কোনো ফুটবলার নিবন্ধন করতে পারবে না। সাধারণত, চুক্তিবদ্ধ বিদেশি ফুটবলার বা কোচ তাঁদের নির্ধারিত পাওনা না পেলে ফিফার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ফিফা তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ক্লাবকে পাওনা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে দলবদল নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর শাস্তি আরোপ করা হয়, যা পাওনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয় না।
চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে আবাহনীর পথচলা ছিল নানা অনিশ্চয়তায় ভরা। মৌসুম শুরুর আগে নতুন বিদেশি ফুটবলার ও কোচের বিষয়ে আলোচনা হলেও, এমনকি কয়েকজনের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছিল বলে জানা যায়। কিন্তু আগস্টের পর সব চুক্তি বাতিল করে দেশীয় কোচ মারুফুল হকের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করে ক্লাবটি। প্রথম পর্বের ম্যাচগুলো তারা সম্পূর্ণ দেশি দল নিয়ে খেলেছে।
ফুটবলসংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা, বাতিল হওয়া কোনো বিদেশি খেলোয়াড় বা কোচই ফিফায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে আবাহনী ক্লাব এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেয়নি।
মৌসুমের শুরুতেই আর্থিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নে আলোচনায় এসেছিল আরেক ক্লাব ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স। একজন বিদেশি খেলোয়াড়ের বকেয়া পরিশোধ না করায় তারা লিগে অংশ নেওয়া নিয়েই অনিশ্চয়তায় ছিল। তবে পাওনা পরিশোধের পর নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় এবং দলটি খেলার অনুমতি পায়।
মোহামেডানের ক্ষেত্রে ঘটনাটি আরও আগে ঘটে। দুই মৌসুম আগে খেলা এক বিদেশি ফুটবলারের পাওনা নিয়ে ফিফায় অভিযোগ জমা পড়ায় ক্লাবটি দলবদল নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে। যদিও বাংলাদেশে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম দলবদল ইতোমধ্যে শেষ হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে দল গঠনে কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি।
ফিফার নিবন্ধন নিষেধাজ্ঞার বর্তমান তালিকায় বাংলাদেশি ক্লাবগুলো নিয়ে মোট ১১টি মামলা চলমান রয়েছে। বাংলাদেশি ক্লাবগুলোর ওপর এ ধরনের শাস্তির ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং নৈতিক দায়বদ্ধতার বিষয়ে গুরুতর প্রশ্ন তৈরি করছে।