৩৪ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়ে রচনা করেছেন নতুন ইতিহাস। তিনিই শহরটির প্রথম দক্ষিণ এশীয় ও প্রথম মুসলিম মেয়র।
সাশ্রয়ী আবাসন, বিনামূল্যে গণপরিবহন, কর্পোরেট কর বৃদ্ধি এবং অভিবাসীসহ সবার জন্য নিরাপদ সম্প্রদায় গড়ে তোলা; এই চার মূল প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতেই মামদানির প্রচারণা গড়ে ওঠে। তবে তার নির্বাচনী যাত্রায় আরও এক অনন্য উপাদান ছিল, ক্রিকেটের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা, যা এসেছে তার ভারতীয় শিকড় থেকে।
উগান্ডায় জন্ম নেওয়া মামদানির মা বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার, আর বাবা প্রখ্যাত একাডেমিক মাহমুদ মামদানি (ভারতে জন্ম নেওয়া উগান্ডার শিক্ষাবিদ)। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট জনপ্রিয় না হলেও মামদানি নিজের মতো করে খেলাটিকে আলোচনায় রাখতে ভূমিকা রেখেছেন।
দ্য ব্রঙ্কস হাই স্কুল অব সায়েন্সে পড়ার সময় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন স্কুলটির প্রথম ক্রিকেট দল। সেই দলই পরে অংশ নেয় পাবলিক স্কুল অ্যাথলেটিক লিগের উদ্বোধনী ক্রিকেট মৌসুমে।
মামদানির ভাষায়, ক্রিকেট তাকে শিখিয়েছে ‘কীভাবে একমনা মানুষরা একসঙ্গে কাজ করে কথাকে কাজে পরিণত করতে পারে।’
রাজনীতিতেও তিনি সেই শিক্ষাটিই কাজে লাগিয়েছেন; দলগত ঐক্য, অধ্যবসায় আর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যেই তার কাজ।
২০২৪ সালের নিউইয়র্ক সিটি ম্যারাথনে অংশ নিয়ে মামদানি দেখিয়েছেন সহনশীলতা ও সম্প্রদায়িক ঐক্যের উদাহরণ। তার দৌড় ছিল কেবল ব্যক্তিগত অধ্যবসায়ের প্রতীক নয়, বরং সমষ্টিগত অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার বার্তাও।
এই ম্যারাথন তাকে যুক্ত করেছে নানা সংস্কৃতি ও পটভূমির মানুষের সঙ্গে, যেখানে তিনি জনস্বাস্থ্য, নাগরিক সম্পৃক্ততা ও সবার জন্য সহজপ্রাপ্যতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ক্রিকেটের পাশাপাশি মামদানি ফুটবলপ্রেমীও। প্রচারণার সময় গাড়িতে বসেই তিনি মাঝে মাঝে আর্সেনালের খেলা দেখতেন। এমনকি ২০২৬ বিশ্বকাপকে ঘিরে ফিফার ‘ডাইনামিক প্রাইসিং’ নীতির বিরুদ্ধে তিনি এক পিটিশনও চালু করেন, যা আয়োজিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয়।