গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে শেষ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর তার মন্ত্রীসভার অনেকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হচ্ছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সদ্য বিদায়ী সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের নাম।পাপন এবং তার স্ত্রী রোকসানা হোসেন ও তাদের সন্তানের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। তাদের কোনো লকার–সুবিধা থাকলে সেগুলোও স্থগিত থাকবে।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে- উল্লিখিত ব্যক্তিরা ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ২৩ (১) (গ) ধারার আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহারও ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর সাবেক সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী গ্রেপ্তার হন। অনেকে চলে গেছেন আড়ালে। তাদের কারো কারো ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। পাপনও ৫ আগস্টের পর থেকে আড়ালে রয়েছেন।
নাজমুল হাসান বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রণালয় সামলেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সন্তান পাপন ২০১২ সালে সরকার মনোনীত সভাপতি হিসেবে বিসিবির দায়িত্ব নেন। এরপর ২০১৩ সালের অক্টোবরে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তিন মেয়াদে বিসিবি সভাপতির দায়িত্বপালন করেছেন।
আগামী বছরের অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা ছিল পাপনের পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বুধবার বিসিবির সভাপতির পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। পাপন পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার পর নতুন সভাপতি হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। এর মাধ্যমে দীর্ঘ এক যুগ পর বিসিবিতে শেষ হয় পাপন-অধ্যায়।