নাসিম শাহর শর্ট বল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে তুলে মারলেন লিটন দাস। বলটা আর খুঁজেই পাওয়া গেলো না।ওই ওভার থেকেই এলো ১৮ রান। দিনের শুরুতে ধীর শুরু, এরপর উইকেট হারিয়ে এক পর্যায়ে চাপেও পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের শেষে লিটনের রোমাঞ্চকর ব্যাটিংয়ের সঙ্গে মুশফিকের দায়িত্বশীল খেলা আশা দেখাচ্ছে দলকে।
রাউয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৪৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে তৃতীয় দিনশেষ অবধি ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৬ রান করেছে বাংলাদেশ।
কোনো উইকেট না হারানোর স্বস্তি নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু সেটি খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৫৮ বলে ১২ রান করে নাসিম শাহর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জাকির হাসান, বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে প্রায় প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো ফিল্ডারের সামনে থেকে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
৩১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তার ও সাদমানের জুটিতে রানের গতি একদমই কমে আসে। এই জুটিও অবশ্য দীর্ঘসময় স্থায়ী হয়নি। ৪২ বলে ১৬ রান করে খুররাম শেহজাদের বলে বোল্ড হয়ে যান শান্ত।
লাঞ্চ বিরতির আগের বাকি সময়টুকু মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে কাটিয়ে দেন সাদমান। লম্বা সময় ধরে উইকেটে থাকা এই ওপেনার লাঞ্চে যাওয়ার ঠিক আগের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তখন ফিফটি থেকে ৫ রান দূরে দাঁড়িয়ে মুমিনুল।
বিরতি থেকে ফেরার পর হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। এরপর অবশ্য উইকেটে থাকতে পারেননি খুব বেশিক্ষণ। ৭৬ বলে ৫০ রান করার পর খুররাম শেহজাদের বলে বোল্ড হয়ে যান মুমিনুল। তার বিদায়ের পর মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়েন সাদমান।
এর মধ্যে একবার বাঁচেন রিভিউ নিয়ে। আগা সালমানের বলে তাকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউতে দেখা যায় বলটি মিস করে যেত লেগ স্টাম্প। সাদমানের রান তখন ৫৭। এরপর ধীরে ধীরে মুশফিকের সঙ্গে জুটিটি বড় হাতে থাকে তার, তিনিও এগোতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে।
কিন্তু চা বিরতির ঠিক আগের বলে বোল্ড হন তিনি। মোহাম্মদ আলির ভেতরে ঢোকা বল সাদমানের ব্যাট ও প্যাডের মাঝখান দিয়ে গিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। ১৮৩ বল খেলে ১২ চারে ৯৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন সাদমান।
তার বিদায়ের পর সাকিব আল হাসান উইকেটে আসেন। নানা কারণে চাপের মুখে থাকা এই অলরাউন্ডার ব্যাট হাতে বড় কিছু করে দেখাতে পারেননি। বরঞ্চ তাকে ফিরিয়ে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট পেয়েছেন সায়েম আইয়ুব। তার বলে কাভার ড্রাইভ করতে গিয়ে শান মাসুদের হাতে ক্যাচ দেন ১৬ বলে ১৫ রান করা সাকিব।
তিনি সাজঘরে ফিরলে মুশফিকের সঙ্গে উইকেটে যোগ দেন লিটন দাস। শুরুতে কিছুটা রয়েসয়েই খেলছিলেন তিনি। কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে, লিটন হয়ে গেছেন মারমুখী। এর মধ্যে নাসিম শাহর এক ওভারে তিনটি চার ও এক ছক্কায় ১৮ রান তুলে নেন তিনি। স্রেফ ৫২ বল খেলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়ে যান লিটন।
হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া মুশফিককে নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করবেন তিনিই। তাদের দুজনের জুটি ১১৮ বলে ৯৮ রানের। ৫৮ বলে ৫২ রানে লিটন ও ১২২ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত আছেন মুশফিক।