সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মারা যাওয়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে ঘুস দাবির মিথ্যা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারিক আদালত। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নাজমুল হুদা। তিনি মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারিক আদালত।
নাজমুল হুদার মৃত্যু প্রতিবেদন আসায় বুধবার (৩ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান মামলাটি নথিজাত করে তাকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, নাজমুল হুদার মৃত্যু সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের পিপি হাজিরা দিয়েছেন। ধানমন্ডি মডেল থানা থেকে তার মৃত্যু সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হুদা মৃত্যুবরণ করেছেন। যেহেতু মামলার একমাত্র আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন সেহেতু মামলার কার্যক্রম আপতত বন্ধ করে মামলাটি নথিজাত করা হলো।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী এম এ সালাউদ্দিন ইস্কান্দার কিং বলেন, এ মামলার একমাত্র আসামি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তিনি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। একমাত্র আসামি মারা যাওয়ায় মামলাটি চলতে পারে না। তাই বিচারক মামলাটি নথিজাত করে নাজমুল হুদাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করেন।
এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিজের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তি হওয়া একটি মামলার রায় বদলে দেওয়া হয়েছে ও উৎকোচ চাওয়া হয়েছে- এমন অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়।
তবে দেড় বছরের তদন্তে নাজমুল হুদার অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি দুদক। ফলে মিথ্যা অভিযোগ করায় ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। আরেক পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মেদকে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিষয়ে তৎকালীন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত বলেছিলেন, নাজমুল হুদা যে মামলাটি করেছেন সেটি একেবারেই ভিত্তিহীন। দুদকের অনুসন্ধানেও আমরা সেটার প্রমাণ পেয়েছি। দুদক আইনের ২৮ এর ২ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন আর সেটি যদি তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাহলে অভিযোগ দায়েরকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।
২০২১ সালের ৭ অক্টোবর ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন। এরপর ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মেদ। ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।