ভারতের নবনির্বাচিত বিজেপি-দলীয় এমপি ও অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের গালে চড় মেরে গ্রেপ্তার ও বরখাস্ত হওয়া সেই নারী কনস্টেবলের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
কুলবিন্দর কৌরের নামের সেই নারীকে ১ লাখ রুপি দেবেন বলে জানিয়েছেন শিবরাজ সিং বাইনস নামে মোহালির এক ব্যবসায়ী। পাশাপাশি পাঞ্জাবের সংস্কৃতি এবং মানুষের ভাবাবেগকে বাঁচানোর জন্য কুলবিন্দরের প্রশংসাও করেন তিনি। কুলিবিন্দরকে কুর্নিশও জানান তিনি।
এদিকে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, কঙ্গনাকে চড় মেরে গ্রেপ্তার ও বরখাস্ত হওয়া সিআইএসএফের নারী কনস্টেবল কুলবিন্দর কৌরের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারতের কৃষক গ্রুপের অনেকে।
এদের মধ্যে অন্যতম শের সিং মহীওয়ায়, যিনি নিজে কৃষক আন্দোলনের একজন সংগঠক। তিনি কাপুরথালায় কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটিতে সংগঠন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এক ভিডিও শেয়ার করে শের সিং বলেছেন, কনস্টেবল কুলবিন্দরের ভাই আমি। তাকে পুরোপুরি সমর্থন করি। আমরা এই বিষয়ে কুলবিন্দরকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি।
তিনি বলেন, আমি গণমাধ্যমের সুবাদে জানতে পারি যে, চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কিছু ঘটেছে। আমি এখন বুঝতে পারছি যে, কঙ্গনার মোবাইল ফোন এবং পার্স চেক করার সময় এই ঘটনাটি ঘটেছে। কঙ্গনা বলেছিলেন যে, নারীরা ১০০ টাকার ‘লোভে’ কৃষকদের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। (তার ওই বক্তব্যের জেরে) তর্ক-বিতর্কের পর আমার বোন নিশ্চয়ই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন, যার কারণে এই ঘটনা (চড়কাণ্ড) ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, সৈনিক এবং কৃষক দেশের জন্য উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
শের সিংয়ের সেই ভিডিও এখন ভাইরাল। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চন্ডীগড় এয়ারপোর্টে চড়কাণ্ডটি ঘটে। নির্বাচনে জয়ের পর দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে সেখানে পৌঁছালে কঙ্গনাকে চড় মারেন সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) কনস্টেবল কুলবিন্দর কৌর। ঘটনার পর পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার পর দিল্লিতে নেমে কুলবিন্দরের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ করেন কঙ্গনা।
ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে কুলবিন্দর জানিয়েছেন মোবাইল ফোন ট্রে’তে রাখা নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কঙ্গনা তার মোবাইল ফোন ট্রেতে রাখা রাজি হননি। একপর্যায়ে বলিউড অভিনেত্রীকে থাপ্পড় মারেন তিনি।
তবে চড় মারার পেছনে অন্য কারণ জানান কুলবিন্দর। তিনি বলেন, ‘কৃষক আন্দোলন চলাকালীন কঙ্গনা একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ১০০ রুপির লোভে কৃষকরা বসে আছে। তিনি নিজে কি সেখানে গিয়ে বসবেন? তিনি যখন এই বিবৃতি দেন, তখন আমার মা সেখানে বসে বিক্ষোভ করছিলেন। ’
সেই ক্ষোভই ঝাড়লেন কঙ্গনাকে সামনে পেয়ে।
ঘটনার পর বিজেপির এমপি কঙ্গনাও নিজের বক্তব্য দেন।
তিনি অভিযোগ করেন চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা তল্লাশির পর যখন বের হতেই পাশের একটি কেবিন থেকে ওই নিরাপত্তারক্ষী বেরিয়ে এসে তার আমার গালে চড় মারেন। তাকে গালিগালাজও করেন।
কঙ্গনা বলেন, আমি ওকে যখন জিজ্ঞেস করলাম, কেন উনি এমনটা করলেন। উনি বললেন, উনি কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেন। আমি নিরাপদে আছি। কিন্তু পাঞ্জাবে যেভাবে আতঙ্কবাদ এবং উগ্রবাদ বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।