তিন দশক আগে সাবেক প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ার একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় চার বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।
উইলি জেমস পাই নামের ৫৯ বছর বয়সী এ ব্যক্তিকে জ্যাকসনের রাষ্ট্রীয় কারাগারে সেডেটিভ পেন্টোবারবিটালের একটি ইনজেকশন পুশের মাধ্যমে রাত ১১টা ৩ মিনিটে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
১৯৯৩ সালের নভেম্বরে অ্যালিসিয়া লিন ইয়ারব্রোকে অপহরণ, ধর্ষণ এবং গুলি করে হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডের সময় পাইকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তার কিছু বলা আছে কিনা, ঈঙ্গিতে তিনি না বলেন। তিনি তার জন্য প্রার্থনা করতে চান কিনা জানতে চাইলে তিনি ইঙ্গিত দেন যে তিনি করবেন।
ইনজেকশন পুশ করার সঙ্গে সঙ্গে পাই স্থির ছিলেন। এরপর ৬বার দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেন। এ সময় তার ঠোঁট কাঁপতে থাকে। এর কয়েক মিনিট পর ওয়ার্ডেন ডেথ চেম্বারে গিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পাইয়ের আইনজীবীরা মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে বিলম্বে আপিল করার পর বিচারকরা মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
প্রসিকিউটররা বলেন, ইয়ারব্রোর সঙ্গে পাইয়ের রোমান্টিক সম্পর্ক ছিল। কিন্তু যখন তাকে হত্যা করা হয়েছিল, তখন তিনি অন্য একজনের সঙ্গে বসবাস করছিলেন। পাই, চেস্টার অ্যাডামস এবং একজন ১৫ বছর বয়সী কিশোর ইয়ারব্রোকে ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে এবং নিকটবর্তী শহরে একটি পার্টিতে যাওয়ার আগে একটি হ্যান্ডগান কিনে।
প্রসিকিউটররা আরও বলেন, তিনজন মধ্যরাতে পার্টি ছেড়ে চলে যায় এবং ইয়ারব্রো যে বাড়িতে থাকতেন সেখানে যায়, বাড়িতে তাকে তার শিশুর সঙ্গে পান। তারা জোর করে বাড়িতে প্রবেশ করে, ইয়ারব্রো থেকে একটি আংটি এবং নেকলেস চুরি করে এবং শিশুটিকে একা রেখে তাকে তাদের সঙ্গে যেতে বাধ্য করে।
প্রসিকিউটররা বলেন, তারা ইয়ারব্রোকে নিয়ে একটি মোটেলে যায়, যেখানে তারা তাকে ধর্ষণ করে এবং তারপর তাকে গাড়িতে নিয়ে মোটেল ছেড়ে যায়। পরে ইয়ারব্রোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে তিনটি গুলি করে সাবেক প্রেমিক পাই।
ইয়ারব্রোর মরদেহ পাওয়া যায় ১৭ নভেম্বর, তাকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পর। এ ঘটনায় পাই, অ্যাডামস এবং ১৫ বছরের কিশোরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়। ইয়ারব্রোকে হত্যায় তাদের সম্পৃক্তা পাই এবং অ্যাডামস অস্বীকার করলেও কিশোর স্বীকার করে।
কিশোরটি প্রসিকিউটরদের সঙ্গে একটি আবেদন চুক্তি অনুযায়ী পাইয়ের বিচারের প্রধান সাক্ষী হয়। ১৯৯৬ সালের জুনে একটি জুরি পাইকে হত্যা, অপহরণ, সশস্ত্র ডাকাতি, ধর্ষণ এবং চুরির জন্য দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
জর্জিয়া ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনস অনুসারে, ১৯৭৬ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহাল করার পর থেকে জর্জিয়ায় ৭৫ জন পুরুষ এবং একজন নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। পাই ছিলেন ৫৪ তম অপরাধী যাকে প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। জর্জিয়ায় বর্তমানে ৩৫ জন পুরুষ ও একজন নারী মৃত্যুদণ্ডের আওতায় রয়েছেন।
সূত্র: এপি