যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সাবেক কর্মকর্তা জন বারনেটের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি উড়োজাহাজের মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পর আলোচনায় আসেন তিনি।
বোয়িং কোম্পানিতে ৩২ বছর কাজ করেছেন জন বারনেট। ২০১৭ সালে তিনি অবসরে যান। মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও বোয়িংয়ের বিপক্ষে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন বারনেট।
বিবিসিকে গতকাল সোমবার বারনেটের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে চার্লেস্টন কাউন্টির মৃতদেহ সৎকারসংক্রান্ত কার্যালয়। তারা বলেছে, নিজেই নিজেকে আঘাত করার কারণে গত ৯ মার্চ বারনেটের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
২০১০ সালে বোয়িংয়ের নর্থ চার্লেস্টন কারখানায় গুণমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি ম্যানেজার) হিসেবে কাজ করেছেন বারনেট। ওই কারখানাতে বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার তৈরির কাজ হয়ে থাকে।
২০১৯ সালে বারনেট বিবিসিকে বলেছিলেন, নির্মাণকাজ চলার সময় চাপের মুখে বোয়িংয়ের কর্মীরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও উড়োজাহাজে নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার করেন।
৭৮৭ ড্রিমলাইনারের জরুরি অক্সিজেন ব্যবস্থায়ও গুরুতর সমস্যা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছিলেন বারনেট। পরীক্ষা চালিয়ে তিনি দেখেছেন, জরুরি অবস্থায় শ্বাস গ্রহণের ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, তার ২৫ শতাংশই অকার্যকর। অর্থাৎ প্রতি চারটি মাস্কের একটি কাজ না করার আশঙ্কা আছে।
বারনেটের ভাষ্য, সাউথ ক্যারোলাইনায় কাজ শুরুর পর পরই তিনি বুঝতে পারেন, নতুন উড়োজাহাজ তৈরির ক্ষেত্রে চাপ দেওয়া হলে বিভিন্ন সরঞ্জাম যুক্ত করার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া শুরু হয়ে যায়। এতে নিরাপত্তার বিষয়টি অতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয় না।
বারনেট বলেছেন, তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপকদের সতর্ক করেছিলেন। তবে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
যদিও বোয়িং কোম্পানি বারনেটের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অবসরে যাওয়ার পর বারনেট বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চার্লেস্টনে ছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গত সপ্তাহে এ মামলায় একটি আনুষ্ঠানিক জবানবন্দি দিয়েছেন বারনেট। তা নিয়ে বোয়িংয়ের আইনজীবীরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। শনিবার আবারও তাঁর জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তিনি উপস্থিত না হওয়ায় তাঁর হোটেল কক্ষেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। ওই হোটেলেরই পার্কিংয়ে একটি গাড়ির ভেতর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
সাবেক এ কর্মীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বোয়িং।