গর্ভকালীন মুখের সুরক্ষা

গর্ভকালীন মুখের সুরক্ষা

ডা. ফারহানা নাজমুন যুথি

গর্ভকালীন সময়ে অন্যান্য সমস্যার মতো দাঁত ও মুখগহ্বরের সমস্যাও বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এ সময়ে অ্যাসিডিটি ও মর্নিং সিকনেসের মতো সমস্যার কারণে মুখগহ্বরে পিএইচ কমে যায় ফলে এর পরিবেশ অ্যাসিডিক হয়ে যায়, যা দাঁতের ওপরের লেয়ার তথা এনামেল ক্ষয় করে। এতে দাঁতে সিরসির অনুভব হয়।

এছাড়া এসময় দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া ও মাড়ি ফুলে যাওয়ার  সমস্যাও দেখা যেতে পারে। নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার না করলে দেখা যেতে পারে মাড়ি ও দাঁতের মূলে ইনফেকশনের মতো রোগ। যার মাধ্যমে গর্ভের সন্তানও আক্রান্ত হতে পারে। 

গর্ভকালীন সময়ে প্রথম ও শেষ তিন মাস সাধারণত আলট্রাসনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দাঁতের চিকিৎসা নিরুৎসাহিত করা হয়। এছাড়া এ সময় ব্যথা  ও ইনফেকশন কমানোর  জন্য সব ধরনের ঔষধ ব্যবহারও গর্ভের সন্তানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া এক্সরে ব্যাবহারের ক্ষেত্রেও সচেতনতা মেনে চলতে হয়। 

এসব কারণে সন্তান নিতে ইচ্ছুক নারীদের গর্ভধারণের পূর্বেই দাঁত ও মুখগহ্বরের সমস্যা থাকলে সেগুলো সমাধান করে নেওয়া উচিৎ। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ও সকালে নাস্তার পর ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ভালভাবে ব্রাশ করতে হবে। 

বমি হলে বমির পর অবশ্যই খুব ভালো করে কুলকুচি করতে হবে। উচ্চরক্তচাপের সমস্যা না থাকলে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবণ দিয়ে (উচ্চরক্তচাপ থাকলে শুধু হালকা গরম পানি) কুলকুচি করলে দাঁত ব্যথা ও মাড়ির রক্তপড়া থেকে আরাম মেলে। মাড়ি ভালো রাখতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া উচিৎ। এছাড়া দুধ, ডিম ও অন্যান্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার দাঁত ও  গর্ভের সন্তানের হাড় গঠনে সহায়তা করে।

সর্বোপরি গর্ভাবস্থায় দাঁত ও মুখগহ্বরের যেকোনো সমস্যায় অবশ্যই একজন বিডিএস ডিগ্রিধারী রেজিস্টার দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। 

ডা. ফারহানা নাজমুন যুথি
লেকচারার, 
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ (ডেন্টাল ইউনিট)
বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন নম্বর: ৮৭১৬

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS