পাঞ্জাবের কট্টরপন্থী নেতা অমৃতপাল সিং ৩৬ দিন পলাতক থাকার পর আত্মসমর্পণ করেছেন। এটা কি তার স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য আত্মসমর্পণ? মোগা জেলায় রোড গ্রামে গুরুদ্বারের বাইরে আসেন অমৃতপাল এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এই গ্রাম হচ্ছে ভিন্দ্রানওয়ালের পৈত্রিক গ্রাম।
পুরো গ্রামটা পুলিশ ঘিরে ফেলেছিল। কট্টরপন্থী নেতা অমৃতপাল রোববার (২৩ এপ্রিল) সকালে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাহলে কি স্ত্রীকে বাঁচাতেই? অমৃতপালের স্ত্রী কিরণদীপ কৌর ব্রিটিশ নাগরিক। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি বিয়ের জন্য ভারতে আসেন।
আগামী জুলাইতে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সূত্র জানাচ্ছে, অমৃতপাল প্রথমে তার স্ত্রীকে যুক্তরাজ্যে পাঠাতে চেয়েছিলেন। তারপর অন্য দেশে পালাবার পরিকল্পনা ছিল তার। কিরণদীপ সম্প্রতি অমৃতসর থেকে লন্ডনে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাকে যেতে দেয়নি।
অমৃতপাল পলাতক হওয়ার পরই কিরণদীপের উপর নজর রাখছিল পুলিশ। সূত্র জানাচ্ছে, তারপরই মতবদল করে অমৃতপাল। স্ত্রী যাতে নিরাপদে ফিরতে পারেন, তার জন্য আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন। অমৃতপালকে গ্রেফতার করে আসামের ডিব্রুগড় জেলে রাখা হয়েছে।
ডিব্রুগড় জেল খুবই সুরক্ষিত। এই জেলেই তার আটজন সহযোগীকেও রাখা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের মনে হয়েছে, উত্তর ভারতের জেলে রাখা হলে, সেখানে অন্য জলবন্দিদের প্রভাবিত করতে পারতেন অমৃতপাল। সেখানকার অপরাধীদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারতেন।
তাতে ভবিষ্যতে বাড়তি সুবিধা পেতে পারতেন অমৃতপাল। তাছাড়া আসামে ভাষাগত সুবিধা পাবেন না অমৃতপাল। গত ১৭০ বছরে ডিব্রুগড়ে একবারের জন্যও জেলভাঙার ঘটনা ঘটেনি। এই জেল ডিব্রুগড় শহরের একেবারে মাঝখানে। ফলে কর্তৃপক্ষ এই জেলের উপর নজর রাখার সুবিধা পায়।
অমৃতপালের বিরুদ্ধে গোটা ছয়টি অভিযোগ আছে। হত্যার চেষ্টা, অপহরণ এবং জোর করে টাকা তোলার মতো অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তবে, তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন গোয়েন্দারা।
অভিযোগ হলো, অমৃতপাল পাকিস্তানের আইএসআইয়ের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে পাঞ্জাবকে সাম্প্রদায়িক দিক থেকে ভাগ করার চেষ্টা করেছেন। পাঞ্জাবের তরুণদের অস্ত্রশিক্ষাও দিয়েছেন। আবার খালিস্তান আন্দোলনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন।