পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ভাঙচুর ও অস্ত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান সারোয়ারসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে মোহাম্মদপুর থেকে মজিবর রহমান সরোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মজিবুর রহমান সারোয়ারকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পল্টন থানার উপপরিদর্শক ফরহাদ মাতুব্বর। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকী আল ফারাবীর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ২ নভেম্বর পিস্তল ছিনতাই ও পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর ভাঙচুরের অভিযোগে খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পল্টন মামলা করেন। মামলায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে আজ শুক্রবার বিকেল ৩টা) ডিএমপির সূত্রাপুর থানা থেকে একজনকে, গেন্ডারিয়া থানায় আটজনকে, নিউমার্কেট থানায় একজনকে, সবুজবাগ থানায় একজনকে, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একজনকে, রমনা থানায় চারজনকে, শাহবাগ থানায় দুইজনকে, পল্লবী থানায় পাঁচজনকে, ভাষানটেক থানায় দুইজনকে, পল্টন থানায় পাঁচজনকে, শাজাহানপুর থানায় সাতজনকে, মিরপুর থানায় একজনকে, শাহ আলী থানায় একজনকে, ভাটারা থানায় একজনকে, বাড্ডা থানায় পাঁচজনকে, বংশাল থানায় পাঁচজনকে, চকবাজার থানায় ১২ জনকে, উত্তরা পশ্চিম থানা তিনজনকে, দক্ষিণ খান থানা একজনকে, যাত্রাবাড়ী থানায় একজনকে ও ডেমরা থানায় বিএনপির তিন নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের উসকানি ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিরা লল্টন থানাধীন পুলিশ ক্যান্টিনে ভাঙচুর করে এবং পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ইটপাটকেল মেরে জাদুঘরের গ্লাস ভাঙে। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। চানমারী পুলিশ লাইন্সের ডিউটি পোস্টে অগ্নিসংযোগসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
জানমালের নিরাপত্তা ও সরকারি সম্পত্তির রক্ষার্থে তাদের নিবৃত করতে গেলে তিন দিক থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকজন পুলিশ আহত হন এবং এএসআই এরশাদুল হককে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করে তার পিস্তল ও আট রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ মামলার উল্লেখ্যযোগ্য আসামিরা হলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক এ বি এম রাজ্জাক, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি খন্দকার এনামুল হক এনাম।