স্পিন বোলিংটা সাধারণত ভালোই খেলেন লিটন দাস। কিন্তু সম্প্রতি বাঁহাতি স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে নিজের সহজাত ব্যাটিংটা করতে পারছেন না জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান। তাই আজ ছুটির দিনেও লিটন মাঠে এলেন অনুশীলন করতে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠের নেটে বাঁহাতি স্পিনারদের বিপক্ষে নিজের ব্যাটিংটা ঝালিয়ে নিতে দেখা গেল লিটনকে। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মন্টু দত্ত।
বিকেএসপির এই ক্রিকেট কোচ ছোটবেলা থেকেই লিটনের খেলাটাকে দেখেছেন। লিটনের ব্যাটিংয়ের খুঁটিনাটি সবই মন্টু দত্তের জানা। তাই লিটন এশিয়া কাপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিটা সারলেন প্রিয় কোচের সান্নিধ্যে। আজ অনুশীলনে বাঁহাতি স্পিনারের একটি বলে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স খেলতে গিয়ে বোল্ড হন লিটন। নেটের পেছন থেকে তা দেখে লিটনকে কাছে ডেকে নিয়ে কিছু একটা বোঝালেন মন্টু দত্ত।
কিছুক্ষণ অফ স্টাম্পের একটি বল ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন লিটন। সে শট খেলার সময় লিটনের মাথার অবস্থান যে ঠিক ছিল না, তা বুঝিয়ে দিলেন বিকেএসপির কোচ। ব্যাকফুট থেকে শরীরের ওজন ফ্রন্ট ফুটে নেওয়ার কৌশলটাও যেন আরও একবার ধরিয়ে দিলেন।
লিটনের সঙ্গে দেখা হলেই ব্যাটিংয়ের খুঁটিনাটি নিয়ে মন্টু দত্তের যত কথা। আজ প্রথম আলোকে মুঠোফোনে জানালেন, ‘ওর সঙ্গে দেখা হলেই কিছু কিছু জিনিস নিয়ে কাজ করার কথা বলে। কিন্তু সব সময় তো হয় না।’ এশিয়া কাপে যাওয়ার আগে সে উপলক্ষ এল, ‘লিটন তো একটু আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান। মারতে চায় সব সময়। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনের বিপক্ষে ওর একটু সমস্যা হচ্ছিল। মারার বলগুলোও মারতে পারছে না। সেটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে কথা হচ্ছিল আজ।’
বাঁহাতি স্পিনের বিপক্ষে ওয়াইড মিডউইকেট দিয়ে বড় শট খেলা নিয়েও আলাদা করে কাজ করেছেন লিটন। মন্টু দত্ত বললেন, ‘ওয়াইড মিডউইকেট দিয়ে ও ভালো মারত। সেদিকে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারত। খেলতে খেলতে সে ভুলে গেছে, আগে কোনটা কাজে লাগত। ওই জায়গাটা একটু মনে করিয়ে দেওয়া আরকি…মূলত ব্যালান্সটা ঠিক করতে বলেছি। ব্যাকফুটে বেশি চাপ পড়ছে, যে কারণে সামনের পায়ের ভরটা কম পড়ছে।’
লিটনের সঙ্গে মন্টু দত্তের দেনা–পাওনার হিসাবও আছে। সেঞ্চুরি করলেই মন্টু দত্ত লিটনকে ১০০ টাকা পুরস্কার দেন। সে হিসাবে লিটনের সর্বশেষ তিনটি সেঞ্চুরির ৩০০ টাকা পাওয়ার কথা। আজ কোচ সে টাকা দিতে চাইলেও লিটন নেননি। এশিয়া কাপ থেকে ফিরে এসে একবারে ৫০০ টাকা নিতে চান লিটন।
তার মানে, এবারের এশিয়া কাপে অন্তত দুটি সেঞ্চুরি করার স্বপ্ন লিটনের। মন্টু দত্তের মুখেই শুনুন সে কথা, ‘ওকে টাকা দিতে চাইলাম। কিন্তু নিল না। ও নাকি বিকেএসপিতে গিয়ে টাকা নেবে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, টাকা বাড়ছে না কেন? পরে সে বলল, স্যার, বাড়বে বাড়বে। আমি ফিরে এসে ৫০০ টাকা নেব।’