রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২১-২২ সেশনে স্নাতক প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে সাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
বুধবার মামলা দায়েরের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।
মামলার এজাহারে উল্লেখিত অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ইয়াছির আরাফাত। তিনি রাজশাহীর কাটাখালী উপজেলার আব্দুল বারীর ছেলে। ফিসারিজ বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আলিফ হোসেন। তিনি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আব্দুল খালেকের ছেলে। লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আল শামস তামিম। তিনি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার আরিফুজ্জামানের ছেলে। ফোকলোর বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম। তিনি পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার সোহরাব আলীর ছেলে। লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী শিশির আহমেদ। তিনি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সামসুল হোসেনের ছেলে। ইলেক্ট্রনিকস অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ফজলুল করিম মাহিন। তিনি পিরোজপুরের আজমল পাশার ছেলে এবং আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী (২০১৫-১৬ সেশন) শফিউল্লাহ। তিনি নগরীর মতিহার থানার নকিবুল্লাহর ছেলে।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ সেশনে স্নাতক প্রথমবর্ষ (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে তিন ইউনিটে অসদুপায় অবলম্বন করে অংশগ্রহণ করেন অভিযুক্তরা। এতে ইয়াছির আরাফাত ও নজরুল ইসলামের হয়ে শিশির আহমেদ, আলিফ হোসেনের হয়ে ফজলুল করিম মাহিন, আল শামস তামিমের হয়ে শফিউল্লাহ প্রক্সি-পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষার্থী না হওয়া সত্ত্বেও এমন অসদুপায় অবলম্বন পাবলিক পরীক্ষা অপরাধ আইন-১৯৮০ এর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তাই উক্ত অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা অভিযোগে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ এনে একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। সেটা আমরা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছি। এ ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি জালিয়াতি নিয়ে সবসময় সতর্ক আছি। তারই ধারাবাহিকতায় এই সাতজনকে ধরা হয়েছে। তবে এটার প্রক্রিয়াগত কারণে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে এদের আমরা প্রথম থেকেই ট্র্যাক করছিলাম। এ বিষয়ে আমাদের আইসিটি টিম ও সঙ্গে আমাদের প্রশাসনও কাজ করেছে।
উপাচার্য বলেন, আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা নিয়েও এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। আমাদের আইসিটি টিম ও পুলিশ প্রশাসনের যারা এ ব্যাপারে কাজ করে তারাও সতর্ক অবস্থানে আছে।
উল্লেখ্য, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে আটক পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে হাজতে পাঠানো হয়। এছাড়া প্রক্সিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজন ভর্তিচ্ছুর ফলাফল বাতিল করা হয়।