মাদারীপুরের ডাসারে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মাদক মামলার পরোয়ানাভুক্ত এক আসামি হাতকড়া পরা অবস্থায় পালিয়ে গেছেন। আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আসামিকে থানায় নেওয়ার পথে ডাসার উপজেলার বয়াতিবাড়ি এলাকা থেকে তিনি পালিয়ে যান। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কামরুল হাসান।
পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম খোকন মুনশি (৩২)। তিনি ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইচপাড়া এলাকার মোতালেব মুনশির ছেলে। ঘটনার পরপরই পুলিশ তাঁর সন্ধানে অভিযানে নেমেছে। তবে বেলা তিনটা পর্যন্ত আসামির কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মাদক মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি খোকন দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে আসামি খোকন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ডাসার থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুশীল চন্দ্র একজন কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে আসামিকে ধরতে যান। আসামিকে গ্রেপ্তারের পর হাতকড়া পরিয়ে সুশীল তাঁর মোটরসাইকেলে তোলেন। মোটরসাইকেলে মাঝে আসামিকে বসিয়ে পেছনে বসেন কনস্টেবল। আসামি বহন করা পুলিশের মোটরসাইকেলটি ডাসার থানার দিকে রওনা হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ যায়। বয়াতিবাড়ি এলাকায় সুযোগ বুঝে আসামি মোটরসাইকেল থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় লাফ দিয়ে পালিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে পুলিশের মোটরসাইকেলটি ধীরগতিতে চলছিল। এই সুযোগে ওই আসামি মোটরসাইকেল থেকে লাফ দিয়ে এক দৌড়ে পরিত্যক্ত ইটভাটার মধ্য দিয়ে পালিয়ে যান। যখন তিনি লাফ দেন, তখন রাস্তা খালি ছিল। এ কারণে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আসামির পালিয়ে যেতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
তবে ডাসার থানার এসআই সুশীল চন্দ্র ঘটনা অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক আসামিকে খোঁজ করছি। তবে হাতকড়া নিয়ে কেউ পালিয়ে যায়নি। তা ছাড়া তিনি ওয়ারেন্টভুক্ত নন। এমনি স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর খোঁজখবর নিতে অভিযান শুরু করেছি।’
এদিকে হাতকড়া নিয়ে মাদক মামলার আসামি পালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কামরুল হাসান ও ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামি পুলিশের হাতকড়া নিয়ে পালিয়ে গেছেন। কীভাবে আসামি পালিয়ে গেছেন, তা তদন্ত করে দেখা হবে। এ নিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের কোনো অবহেলা থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওসি হাসানুজ্জামান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া ওই আসামির বাড়িতে আমরা অবস্থান করছি। তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত নিচ্ছি। তাঁকে ধরতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।’