রাজধানীসহ সারাদশে কোরবানির পশুর দাম নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ক্রেতারা বলছেন পশুর দাম এবার অনেক বেশি, আর বিক্রেতারা বলছেন, গো-খাদ্যসহ লালন-পালনে খরচ বেড়েছে অনেক। তাতে লাভের মুখ দেখাতো দূরের কথা লোকসান গুণতে হতে পারে। সেই হিসেবে পশুর দাম বেশি না, কমই আছে। বরং লোকসানের ঝুঁকিতে রয়েছে খামারিসহ বিক্রেতারা।
সোমবার (২৬ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা নির্ধারিত বাজেটে কাঙ্ক্ষিত পশু কিনতে না পেরে ফিরে গেছেন। তাদের অভিযোগ দেড় লাখের নিচে গরু নাই। ছোট গরুর দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। মাঝারি সাইজের গরু ন্যুনতম দেড় লাখ টাকা।
তবে অনেক ক্রেতা বলছেন, দিনের বেলা দাম কিছুটা চড়া থাকলেও রাতে দাম ছিল স্বাভাবিক। পশুর অতিরিক্ত দাম হাঁঁকেননি বিক্রেতারা।
রাজধানীর গাবতলী হাটে গণমাধ্যমকর্মী নাহিয়ান আরটিভি নিউজকে জানান, দাম সন্ধ্যার পর কমে গেছে। ক্রেতাও নাই আজকে তেমন। বৃষ্টির পর গাবতলী হাটে গরুর দাম কমে গেছে কিছুটা। উল্টাপাল্টা দাম হাকায় না। সহনশীল পর্যায়েই ছিল। দুপুর আর বিকেলে কিছুটা চড়া ছিল। সন্ধার পর সেটা রেঞ্জের ভিতর চলে আসছে।
তিনি আরও বলেন, বিকেলে যে গরুর ব্যাপারিরা চেয়েছিল ১লাখ ৬৫ হাজার, সন্ধ্যার পর সেগুলার দাম হাকায় ১ লাখ ৫০-৫৫ হাজার, এমন। বৃষ্টির পর দাম কমে গিয়েছিল বেশ। এ ছাড়া সন্ধ্যার পর ৮০-৯০ হাজারেও গরু কেনা গেছে। গাবতলী হাটে ভিতরের দিকে দাম কম। উল্টাপাল্টা দাম চায় না।
এ ছাড়া রাজধানীর হাজারীবাগ আফতাবনগর, শনিরআখড়া, কমলাপুর, রহমতগঞ্জসহ বিভিন্ন কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ হাট কোরবানির পশুতে ভরে উঠেছে।
কিন্তু ক্রেতাদেরও ভিড় ছিল। ক্রেতারা অধিকাংশই ঘুরে দেখছেন। অনেক ক্রেতার অভিযোগ, এবার বিক্রেতারা অনেক বেশি দাম হাঁকছেন।
বিক্রেতারা বলছেন, এ বছর মাঝারি আকারের গরুর দাম পড়ছে এক থেকে দেড় লাখ টাকা। লাখের নিচে মিলছে ছোট গরু।
কিন্তু ক্রেতারা অভিযোগ, ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার গরু আকারে খুবই ছোট। দাম খুব চড়া। তবে তুলনামূলক বড় গরুর দাম কম।
মেরাদিয়া হাটে গরু কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী খাইরুল ইসলাম, তিনি বলেন, গত বছর যে গরু ছিল এক লাখ টাকা, এ বছর একই সাইজের গরু প্রায় দেড় লাখ টাকা। সব কিছুর দাম বাড়ছে সত্যি, তবে সরকারকে সরাসরি ফিল্ড পর্যায়ে মনিটরিং করতে হবে। যাতে ব্যাপারীরা অতি মুনাফা করতে না পারে।
সরকারি হিসেবে এ বছর কোরবানিযোগ্য মোট গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি, যা গত বছরের চেয়ে ৪ লাখ ১১ হাজার ৯৪৪টি বেশি।
অপরদিকে কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি। সে হিসাবে এ বছর ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। কোরবানিযোগ্য অতিরিক্ত পশু থাকলেও দামে স্বস্তি মিলছে না। তাই বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে কোরবানির পশু।