যুক্তরাষ্ট্রের আইভিএলপি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে যে অভিজ্ঞতা হলো

যুক্তরাষ্ট্রের আইভিএলপি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে যে অভিজ্ঞতা হলো

ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামকে সংক্ষেপে বলা হয় আইভিএলপি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ পেশাজীবীদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এই বছর ২ এপ্রিল থেকে ১ মে আইভিএলপি প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। সে অভিজ্ঞতার কথাই বলব।
২০১০ সাল থেকে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলার কিশোর ও তরুণদের সঙ্গে কাজ করেছি, বিভিন্ন উদ্যোগে নেতৃত্ব দিয়েছি। ২০১৯ সাল থেকে পাঁচ বছর কক্সবাজার জেলার তরুণদের অধিকার ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করছি। দীর্ঘদিনের এ কাজের অভিজ্ঞতার সুবাদেই আমাকে আইভিএলপি কর্মসূচির জন্য নির্বাচিত করা হয়।

এ কর্মসূচিতে বিশ্বের ২৪টি দেশের ২৪ তরুণ অংশ নেন। অস্ট্রেলিয়ার তরুণ নেতা ডেপুটি মেয়র টবি জাসন থরপির সঙ্গে পরিচয় হলো। নাগরিকদের বিভিন্ন অধিকার নিয়ে কাজ করেন তিনি। তাঁকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানানোর সুযোগ পাই। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশ সম্পর্কে আগে শুনিনি। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশের তরুণেরা যে এত কাজ করছে, জানা ছিল না। বাংলাদেশি বন্ধু পেয়ে আমি খুবই খুশি।’
ইকুয়েডরের জলবায়ুকর্মী ড্যানিয়েল ইস্তাভানের সঙ্গেও পরিচয় হয়। খুব দরিদ্র একটি জনপদে বেড়ে উঠেছেন তিনি। এ রকম একটা আন্তর্জাতিক কর্মসূচিতে সুযোগ পেয়ে ড্যানিয়েলও আমার মতোই খুশি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের স্পেশাল এনভয় ফর গ্লোবাল ইয়ুথ ইস্যুজ-এর দায়িত্বে থাকা অ্যাবি ফিঙ্কেনিউয়ারের সঙ্গে বৈশ্বিক নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। শান্তি রক্ষায় তরুণদের ভূমিকা ও সামাজিক নিরাপত্তার নানা বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
জাদুঘর, লাইব্রেরিসহ মার্কিন ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনা দেখার সুযোগ হয়েছে। হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম, ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব আমেরিকান হিস্টোরি, হোয়াইট হাউস, লিংকন মেমোরিয়াল, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র মেমোরিয়াল, নাসা সদর দপ্তর, কেনেডি স্পেস সেন্টারে গিয়েছিলাম আমরা। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কী কী কাজ করছে, সে সম্পর্কেও আমাদের ধারণা দেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কক্সবাজারে কী কী ক্ষতি হচ্ছে, সে প্রসঙ্গে সবার সামনে বলার সুযোগ পেয়েছিলাম।
ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডাতে বাংলাদেশের তরুণদের সঙ্গে বিভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরারও সুযোগ হয়েছিল। সেখানে দেখলাম নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশ হিসেবে অনেকেই বাংলাদেশ সম্পর্কে জানেন। এ ছাড়াও ওয়েস্টার্ন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ একটি ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেখানে ১৯৭১ সালের গণহত্যা নিয়ে কথা বলেছি।
তিন সপ্তাহের কর্মসূচিতে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি, ফ্লোরিডা, মিশিগান ও সান ডিয়েগোতে। সফরের একেবারে শেষ দিকে জাতিসংঘের দ্য ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল (ইকোসক) ইয়ুথ ফোরাম ২০২৩ সম্মেলনে অংশ নিই। শতাধিক দেশ থেকে ৮৪৮ তরুণ অংশ নিয়েছিল এ আয়োজনে। এত এত তরুণদের সঙ্গে কথা হলো, তাঁদের ভাবনা জানলাম, নিজের ভাবনার কথা জানালাম, দিন শেষে এটাই তো বড় প্রাপ্তি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS