আসছে ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট

আসছে ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট

নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান নিশ্চিত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রয়াসের পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাও গুরুত্ব পাবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার সম্ভাব্য বাজেটের আকার মূলত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতিপথ, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্যই করা হচ্ছে।

এ বাজেটকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী বা সম্প্রসারণমূলক করা হবে না বলেও জানান তিনি।

আগামী অর্থবছরে সরকার ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া মুদ্রাস্ফীতির হার ৬.৫ শতাংশর কাছাকাছি রাখতে চাইছে। মোট বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হবে জিডিপির ৩৩.৮ শতাংশ।

এ বাজেট আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২.৩৪ শতাংশ বড় হবে। এটি হবে ৫০ লাখ ৬,৬৮২ কোটি টাকার, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১৫.২১ শতাংশ। বর্তমান অর্থবছরে এটি ছিল ১৫.২৭ শতাংশ।

বাজেট বক্তৃতায় ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে জনগণের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানানো হবে।

এতে আইসিটি খাত, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত এবং স্মার্ট সিটিজেন তৈরির দিকে নজর দেওয়া হবে।

চলতি বাজেটের তুলনায় আসন্ন বাজেটের আকার বাড়ছে ৮৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।

কর্মকর্তারা বলেছেন, ব্যয়ের বিপরীতে সরকার মোট রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১০ শতাংশ। এরমধ্যে রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আসবে। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা।

এ ছাড়া বৈদেশিক অনুদান হিসেবে আসবে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে মোট রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

অন্যদিকে বাজেটে অনুদান ব্যতীত মোট ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং জিডিপি ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।

এরমধ্যে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩২ কোটি, আর সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার।

আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার পরিচালন ব্যয়ের প্রাক্কলন করেছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। এ ছাড়া উন্নয়ন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।

সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকলেও আগামী অর্থবছর গড় মূল্যস্ফীতির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশিমক ৬৪ শতাংশ।

এদিকে আগামী অর্থবছরে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ নির্ধারণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, তেল-গ্যাস ও সারের বিপুল ভর্তুকি প্রদান, রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর মতো বিষয়গুলোকে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, করযোগ্য আয় নেই এমন লোকদের তাদের টিআইএন বাতিল করার বিকল্প থাকবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS