রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো নামের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিনেও দর্শনার্থী ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) সকাল থেকেই বিভিন্ন ব্র্যান্ড, কারখানা মালিক, টেক্সটাইল শিক্ষার্থী ও আন্তর্জাতিক ক্রেতারা ভিড় জমান আইসিসিবির হল ৪-এ।
ডেনিম শিল্পে সাসটেইনেবিলিটি, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত দুই দিনের প্রদর্শনী দ্বিতীয় দিনে আরও বেশি জমে ওঠে।
আয়োজকদের মতে, গত এক দশকের পথচলায় বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো দেশের ডেনিম খাতকে আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন করে পরিচিত করেছে। দ্বিতীয় দিনে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি, কম পানি ও রাসায়নিক ব্যবহার করে তৈরি ওয়াশিং সল্যুশন, রিসাইকেলড ফাইবারে তৈরি ডেনিম কাপড়সহ বিভিন্ন উদ্ভাবন হাজির করে। বিশেষত পরিবেশবান্ধব ‘ইকো ওয়াশ’ ও ‘লো-ইমপ্যাক্ট ডাইং’ প্রযুক্তি ছিল দর্শনার্থীদের মূল আকর্ষণ।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, বৈশ্বিক বাজারে ক্রেতারা এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর ওপর। তাই বাংলাদেশি প্রস্তুতকারকেরাও নতুন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র, পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাঁচামাল ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন। দ্বিতীয় দিনে এসব প্রযুক্তি হাতে-কলমে উপস্থাপন করায় বেশ আগ্রহ দেখা যায় স্থানীয় ক্রেতা ও উদ্যোক্তাদের মাঝেও।
এদিন আয়োজিত সেমিনারগুলোতেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। ‘সার্কুলার ডেনিম ইকোনমি’, ‘ট্রেসেবিলিটি ইন সাপ্লাই চেইন’ এবং ‘গ্লোবাল মার্কেট ট্রেন্ডস ২০২৫’ শীর্ষক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের ডেনিম শিল্প বিশ্বের অন্যতম দ্রুতবর্ধনশীল সেক্টর। দ্রুত রপ্তানি বৃদ্ধি, দক্ষ মানবসম্পদ এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এই অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করছে।
প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিনের সার্বিক পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর স্টলে ছিল ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা, নমুনা প্রদর্শনী ও সম্ভাব্য নতুন অর্ডার নিয়ে আলোচনা। আয়োজকরা জানান, দুই দিনের এই প্রদর্শনীতে নতুন ব্যবসায়িক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা আগামী মাসগুলোতে রপ্তানি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো শুধু দেশের ডেনিম খাতকেই নয়, বরং পুরো টেক্সটাইল শিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতামূলক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মত দেন সংশ্লিষ্টরা। দ্বিতীয় দিনের সফল আয়োজনের মধ্য দিয়ে ডেনিম এক্সপোর ১৯তম সংস্করণ শিল্পখাতের সামনে নতুন আস্থা ও সম্ভাবনার বার্তা রেখে গেল।